পাখির জন্য গাছের ডালে ডালে মাটির হাঁড়ি!
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
বেলা গড়িয়ে বিকেল, এরপর নেমে আসে সন্ধ্যা। এই সময়টা নীড়ে ফেরা পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে সরব হয় চারপাশ। এসব পাখিদের নিরাপদ আবাস্থলের জন্য টাঙ্গাইলে গাছের ডালে ডালে বাঁধা হয়েছে ছোট ছোট মাটির হাঁড়ি। ঝড়-বৃষ্টিতে যাতে এর ভেতরে পানি জমে না থাকে, সে জন্য গাছে গাছে হাঁড়ি বাঁধার এমন আয়োজন পাখিদের জন্য।
“পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে, এদের রক্ষায় এগিয়ে আসুন” শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে টাঙ্গাইলের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাতিঘর আদর্শ পাঠাগারের উদ্যোগে টাঙ্গাইল পৌর শহরের পৌর উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন গাছের ডালে ডালে অর্ধশতাধিক মাটির হাঁড়ি বসানো হয়েছে।
বাতিঘর আদর্শ পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এতে সংগঠনের সদস্য শামীম আল মামুন, মনসুর হেলাল, সাজ্জাদ হোসেন, জাহিদ হাসান, রাকিব হোসেন, শহীদ ইসলাম ও শামীম-শাহীন বিজ্ঞান একাডেমীর শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
বাতিঘর আদর্শ পাঠাগারের সদস্য জাহিদ হাসান বলেন- পাখিদের নিরাপদ ঘর, আমাদের হাতের কামনা-সবাই মিলে গড়ে তুলি, প্রকৃতির সুন্দর মায়া। পাখিরা আমাদের পরিবেশের অপরিহার্য অংশ। তারা প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্যর একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্ব। তাই তাদের নিরাপদ আবাস্থলের জন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বাতিঘর আদর্শ পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা কামরুজ্জামান জানান- আমরা বইপাঠ কার্যক্রমের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের সুরক্ষায় প্রতিবছর বৃক্ষরোপণ করে থাকি। এরই অংশ হিসেবে পাখিদের জন্য গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি বসানোর উদ্যোগ নিয়েছি। ঝড়-বৃষ্টি, শীত থেকে সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও প্রজননে পাখিদের সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এসব মাটির হাঁড়ি।
তিনি আরও জানান- আমাদের এ উদ্যোগ ধীরে ধীরে পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা থাকবে। আশাকরি, আমাদের এ উদ্যোগ অন্যান্য পাখি প্রেমিদের উৎসাহিত করবে।
“এসো বই পড়ি, নিজেকে আলোকিত করি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌরাকররা গ্রামে ২০১০ সালে গড়ে ওঠে বাতিঘর আদর্শ পাঠাগার। প্রতিষ্ঠার পর থেকে পাঠাগারটি গ্রামের মানুষের মধ্যে পাঠাভ্যাস তৈরি ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মানে সেলুন, বাসস্ট্যান্ড ও স্টেশন অণুপাঠাগার স্থাপনসহ শিক্ষামূলক কর্মকান্ডের পাশাপাশি আর্তমানবতার সেবায় বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।