পারিবারিক কলহে স্বামীকে খুন, লাশ ৯ টুকরো করে সেফটিক ট্যাংকে লুকালেন স্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। স্ত্রী মোমেনা বেগম তার স্বামী অরুণ মিয়াকে হত্যা করে লাশ ৯ টুকরো করে ইট দিয়ে পলিথিনে মোড়িয়ে পাশের বাড়ির সেফটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন।
ঘটনার চার দিন পর মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং মোমেনা বেগম, তার ছেলে রাসেল ও মেয়ে লাকিকে আটক করে।
নিহত অরুণ মিয়া (৬৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ৩৫ বছর আগে দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পারিবারিক কলহের কারণে ২০১৭ সালে অরুণ মিয়া তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান রুবেলের কাছে ঢাকায় চলে যান।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, অরুণ মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান দুবাইয়ে কর্মরত অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুর পর পরিবারের দেনা মেটাতে অরুণ মিয়া তার জমি বিক্রি করে দেনা শোধ করেন। গত শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে অরুণ মিয়া নিখোঁজ ছিলেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অরুণ মিয়ার প্রতিবেশীরা পাশের বাড়ির সেফটিক ট্যাংকের কাছে দুর্গন্ধ পেয়ে টর্চ লাইট দিয়ে ভিতরে পলিথিনে মোড়ানো কিছু দেখতে পান। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে ৯ টুকরো করা পলিথিন মোড়ানো লাশ উদ্ধার করে, যা অরুণ মিয়ার বলে তার ছেলে শনাক্ত করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কুদ্দুস মিয়া জানান, অরুণ মিয়া শুক্রবার তার সাথে নামাজ পড়েন এবং এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। তার স্ত্রী সবাইকে জানান, অরুণ মিয়া ঢাকায় গেছেন, তবে এ নিয়ে এলাকাবাসীর সন্দেহ তৈরি হয়। পরে সেফটিক ট্যাংকে লাশ পাওয়া গেলে সবাই শিউরে ওঠেন।
অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ছেলে লুৎফুর রহমান রুবেল বলেন, "আমার বাবা দীর্ঘ সাত বছর আমার কাছে ছিলেন। কিছুদিন আগে পরিবারের সদস্যরা ঝামেলা মিটিয়ে দিলে তিনি ছোট মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু আমি গত কয়েকদিন ধরে বাবার সাথে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। পরে বাড়িতে এসে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি।"
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কুমার পাল বলেন, "প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। মোমেনা বেগম এবং তার ছেলে-মেয়েকে আটক করা হয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।"