ফেসবুকের প্রেমে চার সন্তান রেখে পালিয়ে যায় প্রবাসীর স্ত্রী
পরকীয়া প্রেমিকা আমেনা বেগম বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ উদ্ধার করে। ছবি: সংগৃহীত
প্রেম মানে না কোনো বাধা কিংবা বয়স। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয় এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আরেক প্রবাসী যুবকের। তাদের মধ্যে দিন দিন সম্পর্ক এতটাই গভীর হয় যে একে অন্যের সঙ্গে পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেন।
জানা যায়, কুমিল্লার বড়ুয়া থানার ভহিষখোলা গ্রাম থেকে প্রেম করে পালিয়ে আসা প্রবাসীর স্ত্রী পরকীয়া প্রেমিকা আমেনা বেগমকে (৩৪) ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ আমজানখোর ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রাম থেকে শুক্রবার (১২ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টায় উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে, ঘরে তার ১৮, ১৫, ১২ ও ৮ বছরের চার সন্তান রয়েছে। স্বামী থাকেন প্রবাসে। কমিল্লা সদরের বাসিন্দা সৌদি আরবপ্রবাসী স্বামী আলমগীর হোসেন তার আয়ের সবটুকু দেশে পাঠাতেন স্ত্রী আমেনা বেগমের কাছে। কুমিল্লার বড়ুয়া থানার ভহিষখোলা গ্রামের আবুল কালাম ভূইয়া মেয়ে স্ত্রী আমেনা বেগম তার স্বামী আলমগীর হোসেন সৌদি আরব প্রবাসে থাকার সুবাদে ফেসবুকে সম্পর্ক গড়ে তোলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম গ্রামের দুবাইপ্রবাসী দেশে ফেরত এক সন্তানের জনক যুবক শাকিল আলীর সাথে।
দিন যায় মাস যায়- তাদের সম্পর্ক আরো গভীর হতে থাকে। আমেনা বেগম একসময় সিদ্ধান্ত নেন তার প্রেমিকের কাছে চলে যাবেন। কথা অনুযায়ী বাসার স্বর্ণালঙ্কার কাপড় ভরে নিয়ে গত ৭ জুলাই চলে যান পরকীয়া প্রেমিক শাকিল আলীর কাছে।
এরপর আমেনা বেগম তার প্রবাসী স্বামী আলমগীরকে নোটারি পাবলিক ক্লাব ও কাজী অফিসের নিকাহ তালাক রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে একতরফা তালাক প্রদান করে তিনি তার স্বামীকে মুক্ত করে দেন। পরে দুবাইয়ে প্রবাসী দেশে ফেরত এক সন্তানের জনক শাকিল আলীর সাথে কাজীর কাছে বিবাহের কাবিননামা রেজিষ্ট্রেশন করেন।
জানা যায়, বিয়ের পর শাকিল আলী তার পরকীয়া প্রেমিকা আমেনা বেগমকে পালিয়ে নিয়ে আসেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের কালিতলা গ্রামে। সেখানে অবস্থান করতে থাকলে এরই মাঝে আমেনা বেগমের বাবা আবুল কালাম ভূইয়া মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় গত ৮ জুলাই কুমিল্লা দক্ষিণ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করে। যার জিডি নং- ৪৭৩।
সাধারণ ডাইরি মূলে পুলিশ মোবাইল ফোনের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের কাছে সহযোগিতা চায়। এই প্রেক্ষাপটে বালিয়াডাঙ্গী থানার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই শামীম হোসেন ও তার সঙ্গীয় ফোর্সসহ শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় উপজেলার আমজানখোর ইউনিয়নের কালিতলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে আমেনা বেগমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পরকীয়া প্রেমিক দুবাইপ্রবাসী শাকিল আলী পালিয়ে যান।
পুলিশ আমেনা বেগমকে থানায় নিয়ে আসার পর তার বাবা আবুল কালাম ভূইয়াকে মেয়ে উদ্ধারের বিষয়টি জানানো হলে তিনি থানায় এলে এসময় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আমেনা বেগম বিষয়টি প্রকাশ করেন। পরে পুলিশ আমেনা বেগমকে তার বাবার জিম্মায় দিলে তিনি মেয়েকে নিয়ে যান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আবুল কালাম ভূইয়ার মেয়ে আমেনা বেগমের সাথে ২০ বছর আগে আলমগীর হোসেনের বিয়ে হয়। ঘর সংসার করাকালে তাদের চার সন্তান হয়।
বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফিরোজ কবির জানান, আমজানখোর ইউনিয়নের কালিতলা গ্রাম থেকে পরকীয়া প্রেমিকাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এরপর তার পরিবারকে জানানো হলে তার বাবা থানায় এসে তার মেয়েকে নিজ জিম্মায় নিয়ে যান।