সরকার পরিবর্তনের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হওয়া টানাপোড়েনের মাঝে নতুন করে আলোচনায় এসেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গোপন গতিবিধি। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ক্ষমতাচ্যুত দলটির অনেক নেতাকর্মী সংগঠিতভাবে ঢাকামুখী হচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারা রাজধানীতে অস্থিরতা তৈরি কিংবা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এই সম্ভাব্য ‘শক্তি প্রদর্শন’ ঘিরে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একাধিক রিপোর্টে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ বিষয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ দেখা দেওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
বিশেষ করে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগপন্থি কিছু ব্যক্তির সরাসরি সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগও সামনে এসেছে। পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, সরকার পতনের পর চট্টগ্রামে দলীয় আধিপত্য ও প্রতিশোধপরায়ণ রাজনীতির কারণে হামলা, দখল ও চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়েছে। একদিকে রাজনৈতিক শূন্যতা, অন্যদিকে পুলিশের মনোবল দুর্বল হয়ে পড়ায় অপরাধীরা সাহস পাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিএসবি) থেকে জেলার সব থানায় পাঠানো হয়েছে একটি বিশেষ চিঠি। সেখানে বলা হয়েছে, ঢাকায় সম্ভাব্য আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম থেকে দলীয় কর্মীরা সংগঠিত হচ্ছে। ফলে ঢাকামুখী যাত্রা প্রতিহত করতে এবং কোনো ধরনের সহিংসতা ঠেকাতে থানাগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) মোহাম্মদ রাসেল বলেন, “সরকার পরিবর্তনের শুরুর সময়টায় কিছুটা ধাক্কা খেলেও এখন পুলিশের মনোবল আগের জায়গায় ফিরে এসেছে। নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে এবং কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।”
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম জানান, “নগরীর বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে পুট ও নাইট পেট্রোল, নতুন চেকপোস্ট স্থাপন এবং ‘মিনি টিম’ গঠন করে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত ফোর্সও মোতায়েন করা হয়েছে।”
তবে চট্টগ্রাম জেলা ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জুনায়েত কাউছার বলেন, “আমি নির্দিষ্ট কোনো চিঠির কথা জানি না। তবে যেকোনো হুমকি বা গুজব পেলেই আমরা নিয়ম অনুযায়ী প্রস্তুতি নিই, যাতে কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটে।”