ভূঞাপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম: ৫ বছরে একদিনও হয়নি খেলাধুলা
ভূঞাপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও প্রায় ৫ বছরের মধ্যে একদিনও খেলাধুলা হয়নি। তবে, এই স্টেডিয়ামে সপ্তাহে প্রতি শনিবার গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র কেনা-বেচার হাট বসানো হয়। ফলে সব ধরণের খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার তরুণ ও যুবসমাজ। জরাজীর্ণ এই মাঠটিতে খেলাধুলার উপযোগী করতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিনে শেখ রাসেল স্টেডিয়াম ঘুরে দেখা যায়, খেলার মাঠজুড়ে খানাখন্দে ভরা, মাঠের চারিদিকে বসানো গ্যালারি বেঞ্চগুলোতে ময়লা-আবর্জনা আগাছায় ভরপুর, বৃষ্টির পানিতে মাঠের মাটি ও প্যালাসাইডিং ধ্বসে গেছে, চড়ানো হয় গরু-ছাগল, বর্জ্যে মাঠের সৌন্দর্য নষ্ট, ভবনের আস্তরণ খসে পড়ছে। পাবলিক টয়লেট ভবন, গোলপোস্টের বেহাল দশা। এছাড়া স্টেডিয়াম নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় খেলোয়াড় তানজীনুর রহমান ইসলামসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্মাণের পর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় স্টেডিয়ামটি পড়ে রয়েছে। সপ্তাহে প্রতি শনিবার বসে গরু-ছাগলের হাট। মাঠটিতে খেলাধুলার কোনো পরিবেশ নেই। যার ফলে নির্মাণের পর থেকে একদিন কোনো খেলাধুলা হয়নি এই মাঠে। অথচ কর্তৃপক্ষ অন্য বিদ্যালয়ের মাঠ ব্যবহার করে খেলাধুলার আয়োজন করে। তাহলে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই স্টেডিয়াম কেন?।’
এদিকে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ভূঞাপুর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা এই স্টেডিয়ামে। এ সময় উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভূঞাপুরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম রয়েছে জানতাম না। এই মাঠে খেলাধুলা পরিবেশ নেই। মাঠটি খেলাধুলার উপযোগি করে স্টেডিয়ামে সকল খেলাধুলার আয়োজন করার দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা’র সাধারণ সম্পাদক রতন ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘শিয়ালকোল হাটের পাশে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের পর থেকে স্টেডিয়াম নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এই স্টেডিয়ামে খেলাধুলার কোনো পরিবেশ নেই। মাঠ ও চারপাশের পরিবেশ একেবারেই নোংরা হয়ে আছে। স্টেডিয়ামটিতে গরু-ছাগলের হাট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এনিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি একাধিকবার জানিয়েও কোনো সুফল মেলেনি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জাহিদুর রহমান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘স্টেডিয়ামে বিষয়ে জেনে বিস্তারিত জানানো হবে, না জেনে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে টেন্ডার হওয়ার পর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ পায় ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আকতার এন্টারপ্রাইজ এবং ফোর সাইট কোম্পানি নামের দু’টি জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি। ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত শেখ রাসেল এই মিনি স্টেডিয়ামটি ২০১৯ সালে নির্মাণ কাজ শেষ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। সে সময় কাজ শেষ হতে না হতেই কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের আগে প্যাভিলিয়ন ভবনে ফাটল দেখা দেয়।