বরিশালে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে কনেকে প্রেমিকের চুমু, অতঃপর...
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় তরুণীর গায়ে হলুদ চলছিল। ওই অনুষ্ঠানে হঠাৎ উপস্থিত হন প্রেমিক। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে অতিথিদের সামনে কনেকে চুমু দেয়ায় ‘প্রেমিক’কে গণধোলাই শেষে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় হতদরিদ্র পরিবারের ওই কনের বিয়ে ভেঙে গেছে। জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে কনের বাড়িতে হলুদের অনুষ্ঠানে আসেন বরপক্ষের লোকজন। সেখানে এসে উজিরপুরের ওই তরুণ কনের সঙ্গে এ অশালীন আচরণ করেন।
পরে রোববার এ ঘটনায় করা মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত শনিবার রাতে উপজেলার বাগধা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদার (২৪) উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের ছত্তার হাওলাদারের ছেলে। আগৈলঝাড়া থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) শফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নে স্কুলে পড়াশোনার সময় ভুক্তভোগী এবং পার্শ্ববর্তী উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের বাসিন্দা জিহাদ হাওলাদারের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন তাদের সম্পর্ক ছিল। তবে পরে জিহাদ হাওলাদার অন্যত্র বিয়ে করেন। সম্প্রতি ওই তরুণীর বিয়ে ঠিক হয়। গত শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাড়িতে গায়ে হলুদ ছিল। বরপক্ষের লোকজনও এসেছিলেন।
অনুষ্ঠান চলাকালে হঠাৎ জিহাদ হাওলাদার সেখানে উপস্থিত হন। তিনি নিমন্ত্রিত ছিলেন না বলে জানা গেছে। জাহিদ লোকজনের সামনেই কনেকে চুমু দেন। উপস্থিত লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে জিহাদকে গণধোলাই দিয়ে রাতেই আগৈলঝাড়া থানা-পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। পরে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলে পুলিশ জিহাদকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
এদিকে এ ঘটনার পরে বরের বাবা বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন বলে মেয়ের পরিবারকে জানিয়ে দেন। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর মা বলেন, ‘আমাদের জায়গা-জমি নেই। আমার স্বামী একজন দরিদ্র কৃষক ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পরে ৯ বছর ধরে অন্যের সাহায্যে এক ছেলে, দুই মেয়ে নিয়ে চারজনের সংসার কষ্টের মধ্যে চালিয়ে আসছি। মেয়ের বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় মহাবিপদে পড়েছি!’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গায়েহলুদের আসরে কনেকে চুমু দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত ছেলে জিহাদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি। আমরা বরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’