গাইবান্ধায় ডলার প্রতারক চক্রের মূলহোতা শরিফুল গ্রেফতার
ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ডলার প্রতারক চক্রের মূলহোতা শরিফুল ইসলামকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তার কাছে থাকা নগদ ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ভুয়া আমেরিকান ডলারের ৫টি বান্ডিলসহ ১টি ব্যাগ উদ্ধারসহ প্রতরণার কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল, একটি ইজিবাইক ও একটি চার্জার ভ্যান জব্দ করা হয়।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টায় নিজ কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক প্রেস ব্রিফিংএ এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে শরিফুলকে গ্রেফতারসহ এসব আলামত উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার শরিফুল ইসলাম সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মৃত গোলাম হোসেনের ছেলে।
পুলিশ সুপার জানান, অনুমানিক ২ থেকে ৩ মাস পূর্বে সাদুল্লাপুর উপজেলার এক নারী মোবাইল ফোনে নরসিংদীর নিজামুল হক (৪৫) নামের এক ব্যক্তির সাথে দাদু-নাতির সম্পর্ক গড়ে তোলে। নিজামুল হক ব্যবসায়িক কাজে বিভিন্ন সময় রংপুর যাতায়াত করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় ওই নারীর অনুরোধে নিজামুল উপজেলার ধাপেরহাট এলাকায় আসলে তাকে অজ্ঞাত এক বাড়িতে নিয়ে যান। এর একপর্যায়ে একটি ব্যাগ ভর্তি আনুমানিক ১০০০টি আমেরিকান ডলার তাকে দেখিয়ে বলে এখানে ৮ হাজার ডলার আছে। তখন ওই নারীর পরিচয় করিয়ে দেয়া পিতা বলে যে, তারা গরিব মানুষ এইসব ডলার কোথায় কি করব, এই ডলারগুলো নিজামুল হককে নিয়ে তাদেরকে ৭ লক্ষ টাকা দিতে বলে। সে সময় টাকা না থাকায় পরে জানাবে বলে ওইদিন নিজামুল হক নরসিংদী চলে যায়। পর থেকে ওই নারী বিভিন্ন সময় ফোন করে নিজামুলকে আমেরিকান ডলারগুলো ক্রয় করার জন্য অনুনয় বিনয় করতে থাকে।
তাদের অনুরোধে গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নিজামুল হক তার মেয়ের জামাইসহ ধাপেরহাট বাজারে আসে। ওখান থেকে ওই নারীর চাচাতো ভাই ইজিবাইকযোগে নিজামুল ও তার মেয়ে জামাইকে নিয়ে দুপুর ২টার দিকে উপজেলার অজ্ঞাত এক বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে থাকা ওই নারী ও তার পিতা হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ব্যক্তি, নিজামুল ও তার মেয়ের জামাইয়ের সাথে কথা বলার একপর্যায়ে অজ্ঞাতনামা ৭ থেকে ৮ জন লোক একটি ব্যাগে ডলার দেখিয়ে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করে। এসময় নিজামুল ব্যাগে থাকা ডলারগুলো দেখতে চাইলে তা না দিয়ে এই বিষয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করলে তাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি প্রদান করে। এসময় নিজামুল নরসিংদী চলে যায়। পরে নিজামুল বাদী হয়ে ৯ ফেব্রুয়রি বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাদুল্লাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে সাদুল্লাপুরের জামালপুর এলাকা থেকে শরফিুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, গ্রেফতার শরফিুল ইসলাম ডলার প্রতারক চক্রের মূলহোতা। সে এই প্রতারণায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের বিরুদ্ধে গোপন অনুসন্ধান চলছে।
প্রেস বিফ্রিংএ সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মো. ইবনে মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. ইব্রাহিম হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) ধ্রুব জ্যোর্তিময় গোপ, সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আজমিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।