'যে পুলিশ কথা শুনবে না, তাঁকে থানায় রাখব না', আ.লীগ নেতার বক্তব্য ভাইরাল
ছবি: সংগৃহীত
'পুলিশ আপনাদের। যে পুলিশ হালায় কথা শুনবে না, সেই পুলিশ হালাকে থানায় রাখব না, পরিস্কার ভাষা।' মাদারীপুর-৩ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের পক্ষে কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল হাসান সেলিমের দেওয়া এমন একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে ভোটার ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এই ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে জেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নের হাকিমুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাদারীপুর-৩ আসনের নৌকা প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ মিয়ার এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন সাহেবরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীকের কর্মী কামরুল হাসান সেলিম।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কামরুল হাসান সেলিমের বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা হলাম ড.আবদুস সোবহান গোলাপের কর্মী, আওয়ামী লীগের কর্মী। আমাদের দিকে চোখ তুলে তাকালে চোখটা খুলে ফেলতে হবে। আবার কেউ যদি বলে পা ভেঙ্গে ফেলবে, তাহলে আমাকে ফোন দিবেন, চর্তুদিক দিয়ে বল্লার মতো এসে ধরে ওকে শেষ করে দেয়া হবে, কোন ছাড় হবে না। আপনারা পারবেন না? ভয় লাগে? আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। পুলিশ আপনাদের। যে পুলিশ হালায় কথা শুনবে না সেই পুলিশ হালাকে থানায় রাখব না, পরিস্কার ভাষা।”
এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সোহেল রানা বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নৌকা প্রার্থী এবং তার কর্মী ও সমর্থকরা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। বিভিন্ন সভা-উঠান বৈঠকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভীতিকর বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে ভোটারদের মধ্যে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি ও নির্বাচনের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।
তিনি আরও বলেন, কামরুল হাসান সেলিমের উক্ত ভীতিকর, উস্কানীমূলক এবং পুলিশ বাহিনীকে হেয় প্রতিপন্ন, অশালীন বক্তব্যের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং যথাযথ আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান সোহেল রানা।
এদিকে বক্তব্যের বিষয়টি স্বীকার করে আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল হাসান সেলিম বলেন, অন্যভাবে বক্তব্য দিতে চেয়েছিলাম, তবে মিসটিক হয়ে গেছে। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি এমন কথা বলতে পারিনা। গতকাল থেকেই বিষয়টি নিয়ে আমি অনুতপ্ত। এর জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি।
এ ব্যাপারে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।