পুরোপুরি বন্ধ পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কয়লা না থাকায় শেষ পর্যন্ত বন্ধই হয়ে গেল দেশের বৃহত্তম ও সর্বাধুনিক পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। সোমবার (৫ জুন) বেলা ১২টা ১০মিনিটের দিকে দ্বিতীয় ইউনিটটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে দেশের বৃহত্তম এ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
গত ২৫ মে কয়লা সংকটে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ হয়েছিল। কয়লার মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় বাকি আরেকটি ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র বলছে, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার দাম ৩০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সময় মতো ডলার ছাড় করতে রাজি না হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। গত মাসে চীনা বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। তারা ৩০০ মিলিয়ন ডলার মধ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলার দিতে সম্মত হয়।
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের খামখেয়ালিকে দায়ী করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, কয়লা আমদানির জন্য ডলারের জন্য বাংলাদেশের ব্যাংকে বারবার আবেদন করে প্রত্যাখ্যান হয়েছেন তারা।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদ বলেন, আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী ৪০০ টনের মতো কয়লা মজুত রয়েছে। যা দিয়ে কেন্দ্রটি বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চালানো যাবে। এরপর তা বন্ধ হয়ে যাবে।
দেশে তীব্র তাপদাহের মাঝে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনগণ। এর মাঝে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বন্ধের খবর জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় ১০ ভাগই আসে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। কেন্দ্রটি সংকটের মধ্যে প্রতিদিন ১ হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট ক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। এমন পরিস্থিতিতে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোডশেডিং আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদনের সক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। উৎপাদনে যাওয়ার এবারই প্রথম কয়লা সংকটের কারণে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।