ঘূর্ণিঝড় মোখা: সেন্টমার্টিন ছাড়ছেন স্থানীয়রা
সংগৃহীত ছবি
সেন্টমার্টিন ছাড়তে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' হিংস্র রূপ ধারণ করার আগেই দ্বীপ ছাড়ছেন তারা। বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাত ১১টা পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার মানুষ সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ সদরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও বাসা-বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা সংকেত জারি হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যাপক মাইকিং করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে টেকনাফে চলে গেছে প্রায় হাজার খানেক মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘সার্ভিস বোট, ফিশিং বোটসহ বিভিন্ন নৌ-যানে করে দ্বীপের বাসিন্দারা নিরাপদে চলে যাচ্ছে । শুক্রবার দ্বীপের আরো কিছু মানুষ নিরাপদে আশ্রয় নিবেন।’
ওই ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার হাবিব খান বলেন, ‘হক পরিবার, ইউরো বাংলা রেস্টুরেন্টের মালিক ও কাঁচা মাছ ব্যবসায়ী মাহবুবসহ ১৫টি পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।’
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘উপকূলের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার সেই পরিস্থিতি এখনও হয়নি। তবে দ্বীপবাসীকে সতর্ক থাকতে প্রত্যেক গ্রামে সচেতন করা হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রসহ হোটেল গুলোর পাশাপাশি দ্বীপে সিপিপির ১৩০০ স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
এ ছাড়াও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্বীপের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সাগরের বুকে জেগে ওঠা এই প্রবাল দ্বীপসহ মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফ নদের তীরে অবস্থিত শাহপরীর দ্বীপে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীও।
টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন বলছে, দুর্যোগে স্থানীয়দের জন্য উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি ৮৭টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও ডাকবাংলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ জোন হিসেবে সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপের জন্য নৌ-বাহিনীসহ বিজিবি,পুলিশ,কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, মেডিক্যাল টিমসহ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান বলেন, সাগরের বুকে জেগে ওঠা বিচ্ছিন্ন সেন্টমার্টিন দ্বীপকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্বীপের জন্য নৌ-বাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি দ্বীপে বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপে হোটেল-মোটেলসহ অর্ধশতাধিক আশ্রয় কেন্দ্ৰ
প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হটলাইন খোলা হয়েছে। বিশেষ করে দুই দ্বীপের (সেন্টমার্টিন ও শাহপরী) বাসিন্দাদের সচেতনতার পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য আগে থেকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
এদিকে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় পরিণত হলে বৃহস্পতিবার (১১ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে এক নম্বর দূরবর্তী সতকর্তা নামিয়ে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়।
এসআইএইচ