কুমিল্লায় ১১ শিক্ষককে অব্যাহতি, ২ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় নকল করতে বাধা দেওয়া এবং কেন্দ্রে কড়াকড়ি পাহারা দেওয়ার অভিযোগ এনে শিক্ষকদের উপর হামলা করেছে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা শেষে বেশ কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা মিলে উত্তরপত্র ছিনিয়ে নেবারও চেষ্টা করে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ৬ জন আহত হন।
অপরদিকে মহেশপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে খাতা নিয়ে আসার পথে কে বা কারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে নুরুল ইসলাম নামে এক কনস্টেবল আহত হন। পরে এসব ঘটনায় ২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও ১১ শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়েছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৯ মে) এসব ঘটনা ঘটে। পরে বরুড়া হাজী নোয়াব আলী কেন্দ্র পরিবর্তন করে পার্শ্ববর্তী শাহেরা বানু কলেজে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড। এ ছাড়া মহেষপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিবকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লার উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. শহিদুল ইসলাম।
তিনি জানান, যেসব কেন্দ্র থেকে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যাচ্ছে- সেসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা আফরিন মুস্তফা বলেন, সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা হয়েছে। দায়িত্ব অবহেলার কারণে ১১ জন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ হোসেন বলেন, হাজী নোয়াব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের গোলযোগের খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। দ্রুত বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। পরীক্ষার খাতা ছিনিয়ে নেবার সময়ও টের পেয়ে পুলিশ সেগুলো রক্ষা করে শিক্ষাবোর্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
জানা গেছে, অংক পরীক্ষা শেষে খাতা টানার অভিযোগ এনে কয়েকজন পরীক্ষার্থী এক শিক্ষকের মোটরসাইকেলের গ্লাস ভাঙচুর করে। এতে পুলিশ বাধা দিলে কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও বহিরাগতদের মাঝে ইটপাটকেল ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
এতে সজিব হোসেন ( ২১), তাজুল ইসলাম (১৫), মোহাম্মদ আলী (৩৮), উদয় (১৭), ফাহাদ (১৭), মো. ফারুক হোসেন (২১) আহত হন। মো. ফারুক হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিভিন্ন কেন্দ্রে ২ শিক্ষার্থী ও ১১ জন শিক্ষককে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে কৃষ্ণপুর মাদ্রাসার ১ শিক্ষার্থী ও তলাগ্রাম তারিণী চরণ লাহা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। বাতাইছড়ি কেন্দ্রে কেমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সরোয়ার আলম ও শিমুল চন্দ্র ভৌমিক, আড্ডা উমেদারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঝলম স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক জহিরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, রঞ্জিত সরকার, বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে বাতাইছড়ি মাদ্রাসা শিক্ষক রাবেয়া আক্তার, চালিতাতলী মাদ্রাসা শিক্ষক ইলিয়াছ মিয়া, ঝলম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিনা ইসলাম ছোটতুলাগাও উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষক খোকন চন্দ্র শর্মা, পয়ালগাছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শাহিদা আক্তারকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বরুড়া হাজী নোয়াব আলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র সচিব মো. মেধাদ উদ্দিন বলেন, নকলমুক্ত সুন্দর পরিবেশে পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষা শেষে বহিরাগত কিছু লোকজন পরীক্ষা হলের বাইরে গোলযোগ করেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
এসজি