যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা: মাস্টারমাইন্ডকে খুঁজছে পুলিশ
বোরকা পরে গুলি করে কুমিল্লার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে খুনের মূল পরিকল্পনাকারীকে খুঁজছে পুলিশ। তবে দেশজুড়ে আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় বোরকা পরিহিত যে তিনজন দুর্বৃত্ত জামাল হোসেনকে গুলি করেছে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।
তিনি জানান, এ তিনজনের কেউ দেশে, কেউ বিদেশে অবস্থান করছেন। হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিগগির বাকিদের গ্রেপ্তার করে খুনের মাস্টারমাইন্ডকে চিহ্নিত করা হবে।
সোমবার (৮ মে)কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।
পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, তিতাসের যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার প্রতিটি মুহূর্তে খুনি ও সংশ্লিষ্টরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছে। শুটাররা যে বোরকা পরে গুলি করেছিল এরকম অনেকগুলো বোরকা কেনা হয়েছে। তারা বেশ কয়েকবার ট্রায়াল দিয়েছে। এরপর হত্যার মিশনে নেমেছে। ইতোমধ্যে আমরা তিনজন শুটারের পরিচয় জানতে পেরেছি। তাদের নাম ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ বৃত্তান্ত আমরা সংগ্রহ করেছি, নিশ্চিত হতে পেরেছি। এর মধ্যে কেউ দেশে আছেন, কেউ বাইরে আছেন। যারা দেশে আছেন তাদেরকে গ্রেপ্তারে ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে।
পুলিশ সুপার বলেন, শুটারদের আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। এখন খুনের মাস্টারমাইন্ডকে খুঁজে বের করার পালা। আশা করছি দ্রুতই মূল পরিকল্পনাকারীকে আমরা চিহ্নিত করতে পারব। র্যাবের তদন্ত, পুলিশের তদন্ত, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য এক করে এ খুনের মাস্টারমাইন্ডকে খুঁজে বের করা হবে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে র্যাব-পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম বাজারে তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এবং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে বোরকা পরা তিন দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় ২ মে রাত সাড়ে ১১টায় দাউদকান্দি থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত জামালের স্ত্রী পপি আক্তার।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ও পুলিশ। এদের মধ্যে তিনজন এজাহারনামীয় আসামি এবং বাকি তিনজন হত্যাকাণ্ডে নানাভাবে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মামলার এজাহারনামীয় আসামি তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার (৪০), উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের খুরশিদ মিয়ার ছেলে মো. ইসমাইল (৩৬) ও দাউদকান্দি উপজেলার গোপচর গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের ছেলে শাহ আলম ওরফে পা কাটা আলম (৩৬), তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের মৃত কালু নিয়ে ছেলে মো. রবি (৩৩), একই এলাকার মৃত আসাদ মিয়ার ছেলে মো. শাহপরান (৩৪) এবং তিতাস উপজেলার লালপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের শামসুল হকের ছেলে সুমন হোসেন (২৭)।
এসজি