কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যায় আরও গ্রেপ্তার ৩
কুমিল্লায় চাঞ্চল্যকর যুবলীগ নেতা জামাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় জব্দ করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত গাড়ি, বোরকা, হিজাব ও খুনিদের ব্যবহৃত দুই জোড়া ক্যানভাস স্যু।
সোমবার (৮ মে) বেলা ১১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন-তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের মৃত কালু নিয়ে ছেলে মোহাম্মদ রবি, একই এলাকার মৃত আসাদ মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ শাহপরান এবং তিতাস উপজেলার লালপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের শামসুল হকের পুত্র সুমন হোসেন।
এর আগে এই মামলায় এজাহার নামীয় তিন আসামিকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এই নিয়ে যুবলীগ নেতা জামাল হত্যাকাণ্ডে মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ডের পর প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা সকল সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বোরকা পরা তিনজনকে শনাক্তের জন্য ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়। আসামিদের ঘটনাস্থলে প্রবেশ ও বাহিরের রাস্তা শনাক্ত করা হয়। বিশ্লেষণ করে ঘটনার রাতে আসামিদের ব্যবহৃত একটি কালো হাইস্ গাড়ির চালক মোহাম্মদ সুমনকে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার গাড়িটি জব্দ করে তার বাসা তল্লাশি করে এবং তার দেখানো মতে ঘটনার সময় বোরকা পরিহিত আসামিদের ব্যবহৃত দুই জোড়া ক্যানভাস স্যু এবং সুমনের একটি ট্রাউজার জব্দ করা হয়। এ ছাড়াও মোহাম্মদ শাহপরান এবং মোহাম্মদ রবিকে ডিএমপি ঢাকার মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শাহাপরান ঘটনার সময় ঢাকায় অবস্থান করে ঘটনাস্থলে থাকা আসামিদের সাথে ঘটনার আগে ও পরে যোগাযোগ করে এবং আত্মগোপনে থাকার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে। সে ওই হত্যা মামলার ৮ নম্বর এজাহার নামীয় আসামি অলি হাসানের ভায়রাভাই হয়। অপরদিকে গ্রেপ্তার রবি মামলার এজাহার নামীয় ৯ নম্বর আসামি কালা মনিরের ভাই। সে ঘটনাস্থলের আশপাশে অবস্থান করে শুটারদেরকে তথ্য দেয় এবং পালাতে সাহায্য করে।
তিনি আরও জানান, চাঞ্চল্যকর জামাল হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন, জেলা ডিবি পুলিশের ওসি রাজেশ বড়ুয়াসহ জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম বাজারে তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এবং উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে বোরকা পরা তিন দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় ২ মে রাত সাড়ে ১১টায় দাউদকান্দি থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত সাত থেকে আটজনের নামে মামলা করেন নিহত জামালের স্ত্রী পপি আক্তার।
এসআইএইচ