প্রশাসনের হস্তক্ষেপে প্রবেশপত্র পেলেন সুমাইয়া, বসলেন পরীক্ষায়

অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে প্রবেশপত্র পেলেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শিলাইকুঠি বালাবাড়ি দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার। সকালেই তার হাতে প্রবেশপত্র পৌঁছে দেয় উপজেলা প্রশাসন। পরে সে কালান্দিগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, তিন মাস আগে নির্ধারিত সময়ে ফরম পূরণের ২৫০০ টাকা সুমাইয়ার কাছ থেকে আদায় করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এরপর পরীক্ষার জন্য দিন-রাত পড়াশুনা করে প্রস্তুতি নেয় সুমাইয়া। শনিবার মাদ্রাসায় প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা ছিল। সেই প্রবেশপত্র আনতে যায় সুমাইয়া। প্রবেশপত্রের জন্য অন্যদের মতো মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে ৫০০ টাকাও দেন তিনি। প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে দেখেন তার নামে কোনো প্রবেশপত্রই আসেনি। পরে জানতে পারেন তার ফরম পূরণই করেনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। তার বদলে ভুল করে দুই বছর আগে বিয়ে হয়ে লেখাপড়া থেকে ছিটকে পড়া সুরাইয়া নামের এক ছাত্রীর ফরম পূরণ করে দিয়েছেন তারা। এরপর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ওই ছাত্রী (সুমাইয়া)।
পরে বিষয়টি তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হক ও জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম রাতভর মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। রাতেই বোর্ডের চেয়ারম্যান ওই ছাত্রীর পরীক্ষা দেয়ার সব ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। রবিবার (৩০ এপ্রিল) সকালেই বোর্ড থেকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রবেশপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রবেশপত্র পেয়ে দারুন খুশি সুমাইয়া।
সুমাইয়ার বড় বোন মোর্শেদা আক্তার বলেন, যখন আমার বোন শুনেছে যে তার ফরম পূরণই হয়নি তখন সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। আসলে সে এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল না। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমার বোন প্রবেশপত্র পেয়েছে। অবশেষে পরীক্ষা দিল। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। সেই সঙ্গে বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়কেও ধন্যবাদ।
দাখিল পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বলেন, আমি পরীক্ষা দিতে পেরে খুবই আনন্দিত। যারা আমাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এখন আমি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে নিজের ক্যারিয়ার গঠন করতে পারব।
এ ব্যাপারে তেঁতুলিয়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হক বলেন, ওই মাদ্রাসাছাত্রীর বিষয়টি শোনার পরে আমি ও জেলা প্রশাসক মহোদয় বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করেছি। রাতেই তিনি আমাদের বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে সকালে বোর্ড থেকে ওই ছাত্রীর প্রবেশপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার আগেই আমরা ওই ছাত্রীর কাছে প্রবেশপত্র তুলে দিতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই না কেউ এমন ভুলের কারণে লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়ুক। এছাড়া এমন ভুলের যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য ওই প্রতিষ্ঠানসহ সকলকে সতর্ক করা হয়েছে।
এসআইএইচ
