উখিয়ায় অস্ত্র-গোলাবারুদসহ ৪ রোহিঙ্গা আটক
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে ৭ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ছমি উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল রোহিঙ্গার সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) সকালে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র গোলাবারুদসহ ৪ রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করে আর্মড পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো ক্যাম্প-২ এর বি-ডাব্লিউ ব্লকের মৃত মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে মো. জোবায়ের (২০), ক্যাম্প-৬ এর ডি-৮ ব্লকের মৃত কামাল হোসেনের ছেলে নুর মোহাম্মদ (২৫), ক্যাম্প-৫ এর ডি-৮ ব্লকের জোবায়ের আহমদের মেয়ে মোসা বিবি (১৬) ও মৃত সালেহ আহমদের স্ত্রী জামিলা বেগম (৪৮)। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪টি দেশীয় ওয়ান শুটারগান, চায়না রাইফেলের ৩০টি গুলি, পিস্তলের গুলি ২৭টি, শটগানের কার্তুজ ৫টি, ৩টি খালি ম্যাগজিন, ৪টি ওয়াকিটকি, ৫টি মোবাইল ফোন ও একটি চাকু জব্দ করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় ১৪ এপিবিএন কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডিআইজি মো. জামিল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এপিবিএন-এর কাছে খবর আসে ক্যাম্প-৭ এ সন্ত্রাসী ছমি উদ্দিনের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন সংঘবদ্ধ হয়ে অপরাধ সংঘটিত করার পরিকল্পনা করছে। এ প্রেক্ষিতে ক্যাম্পে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে টহল জোরদার করা হয়।
তিনি আরও জানান, পরে ঘটনাস্থলে এপিবিএন সদস্যরা উপস্থিত হলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। সরকারি সম্পদ রক্ষা ও আত্মরক্ষার্থে এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। গোলাগুলির এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। ঘটনার সূত্র ধরে সন্ত্রাসীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে রাতভর গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ডিআইজি জামিল বলেন, অভিযানের এক পর্যায়ে আজ সকাল ৭টায় সন্ত্রাসী ছমি উদ্দিন দলবলসহ ক্যাম্প-৫ এর একটি ঘরে অবস্থান করছে, এমন খবরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে এপিবিএন। কিন্তু সন্ত্রাসী ছমি উদ্দিনসহ অন্যান্যরা পালিয়ে যায়।
পর্যাপ্ত তল্লাশি চৌকি থাকার পরেও কীভাবে অস্ত্র, মাদক ক্যাম্পে প্রবেশ করে সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা সবসময় চেষ্টা করি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে। ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় কৌশলে রোহিঙ্গারা কাঁটাতারের বেড়া কেটে বাইরে চলে যায়। অন্যদিকে, বিভিন্ন এনজিও সংস্থার বেশ কিছু ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র ক্যাম্পের বাইরে হওয়ায় রোহিঙ্গারা আসা-যাওয়া করছিল। এর ফাঁকে বের হওয়ার সুযোগ পায়। তবে তল্লাশি চৌকিতে তারা বিভিন্ন সময় মাদক, অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান তিনি।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ডিআইজি সৈয়দ হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত ডিআইজি আমির জাফর ও এপিবিএন পুলিশের কর্মকর্তাসহ গণমাধ্যমকর্মীরা।
এসজে/এএস