দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে পাউবোর প্রকৌশলীর অপসারণ দাবি
নীলফামারীর ডিমলায় ‘দুর্নীতিবাজ রুবাইয়াত ইমতিয়াজকে হটাও, তিস্তা প্রজেক্ট বাঁচাও’
‘দুর্নীতিবাজ রুবায়েত ইমতিয়াজের চামচা বড়বাবু শরিফুলকে হটাও, তিস্তা যান্ত্রিক বিভাগ বাঁচাও’- এ ধরনের পোস্টার লাগিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে। অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে এমন আন্দোলন করছেন এলাকাবাসী ও ঠিকাদাররা।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (যান্ত্রিক বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী রুবায়েত ইমতিয়াজ ও বড়বাবু শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমন প্রতিবাদের পোস্টার পানি উন্নয়ন বোর্ডের চারপাশে লাগানো হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, ডালিয়া পাউবোর যান্ত্রিক বিভাগের প্রকৌশলী রুবায়েত ইমতিয়াজ প্রায় ৯ বছর ধরে একই শাখায় কর্মরত থাকায় এখন তার দাপটে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী, ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টরা। পোস্টারে তার দুর্নীতির সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও ঠিকাদাররা।
পোস্টারে উল্লেখ করা হয়, প্রকৌশলী রুবায়েত ইমতিয়াজ সব সময় দাপটের সঙ্গে নানা অনিয়ম করে চলেছেন। ঠিকাদারি কাজ ঠিকাদারের নামে নিজেই করেন। সরকারি গুদামের কোটি কোটি টাকার মালামাল চুরি করে আত্মসাৎ করেছেন তিনি। আউটসোর্সিং নিয়োগের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া, অধঃস্তনদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করাসহ দীর্ঘদিন একই দপ্তরে থাকায় সিন্ডিকেট তৈরি করে অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত থাকা, সরকারি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করা ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দিবসে অংশগ্রহণ না করার অভিযোগ করা হয়। আর এসব কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন অফিসের বড়বাবু শরিফুল ইসলাম।
পোস্টারে অবিলম্বে ডালিয়া থেকে এই কর্মকর্তার অপসারণ ও তার দুর্নীতি-অনিয়মের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
এর আগে জরুরি কাজের নামে পুরানো তার-খুটি দিয়ে মাত্র ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ডালিয়া পাউবোর বৈদ্যুতিক লাইন সংস্কার করা হয়। এ কাজে অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশে ৩০ লাখ টাকা বিল ভাউচার করেন প্রকৌশলী রুবায়েত। তিস্তা ব্যারাজের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজে অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। সানব্লাস্টিং মেশিনসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ব্যারেজ রং করার কথা থাকলেও শ্রমিকের মাধ্যমে হাত দিয়ে দায়সারাভাবে রং করে ঠিকাদারের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করারও অভিযোগ ওঠে প্রকৌশলী রুবাইয়াত ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে। তবে এসব বিষয়ে একাধিকবার জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও ব্যবস্থা নেয়নি পাউবো কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার ও অফিস সূত্র জানায় ,প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি নিয়মিত অফিসে আসেন না। কাজ না করেও বিল-ভাউচার তৈরি ও একই মাল বার বার ভাউচার বানিয়ে বিল উত্তোলন করেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারকে একাধিক কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রকৌশলী রুবায়েত ইমতিয়াজ বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। কিছু স্থানীয় ঠিকাদার ষড়যন্ত্র করে এসব পোস্টার লাগিয়েছে।
তিনি নিজেকে একজন বিচারপতির ভাতিজা পরিচয় দিয়ে বলেন, যারা পোস্টার লাগিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পছন্দের ঠিকাদারকে একাধিক কাজ দেওয়ার বিষয়ে এই প্রকৌশলী বলেন, যাদের যোগ্যতা আছে তারাই কাজ পাবে।
এসআইএইচ