পরিবহন নেতাকে হত্যায় স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

কুমিল্লায় পরকীয়া প্রেমের জের ধরে রেজাউল করিম রাজা নামে এক পরিবহন নেতাকে হত্যার দায়ে তার স্ত্রীসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- হত্যাকাণ্ডের শিকার রাজা মিয়া স্ত্রী মোসা. আলো আক্তার (৩০), কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিণ সতানন্দি গ্রামের শান্তি রঞ্জন শীলের ছেলে তাপস চন্দ্র শীল (২৫) এবং চান্দিনা উপজেলার বশিকপুর গ্রামের দক্ষিণ পাড়া জয়নাল মেম্বার বাড়ির আ. সামাদ প্রকাশ্যে সামাদ সরকারের ছেলে মো. রাসেদ (২৮)।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায় ঘোষণাকালে আসামি রাসেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর ২ আসামি মোসা. আলো আক্তার ও তাপস চন্দ্র শীল পলাতক রয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার রেজাউল করিম রাজা মিয়া মুন্সীগঞ্জের পুরাতন চরচাষী গ্রামের মৃত ছোয়াব আলী বেপারীর ছেলে। তিনি গজারিয়া পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিণ সতানন্দি গ্রামে শ্বশুর বাড়ির পাশে বসবাস করতেন তিনি।
মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১২ জুন পরকীয়া প্রেমের জেরে স্ত্রী আলো আক্তার, তাপস চন্দ্র শীল ও মো. রাসেদ মিলে পরিবহন নেতা রাজা মিয়াকে হত্যা করে। ওই দিন রাতে দাউদকান্দি উপজেলার সতানন্দি গ্রামে আবদুল আউয়াল কমিশনারের বাড়ির পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ১৪ নভেম্বর রাজা মিয়ার ভাই খাজা মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে দাউদকান্দি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে রাজা মিয়ার স্ত্রী আলো আক্তারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তাপস এবং রাশেদ এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত রয়েছে বলে জানান। পরে পুলিশ তিন আসামিকে আটক করে এবং তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এরপর ২০১৫ সালে ২৭ মে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এবং আসামিদের জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আদালত ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।
এদিকে রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এপিপি নজরুল বলেন, এর মধ্যে দিয়ে ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অপরদিকে আসামি পক্ষের মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন, এ রায়ে আসামি পক্ষ ক্ষুদ্ধ। রায়ের কপি হাতে পেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
এসআইএইচ
