টানা ১০ দিন সব্বোর্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা
দুপুর সাড়ে ১২ টা মাথার উপর সূর্যের প্রখর তাপ। তাপমাত্রা তখন ৩৭.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। মাঠে কাজ করছে কৃষক মেছের আলী। রোদির এতো তাপ মাঠে দাড়ানো যাচ্ছে না। একটু কাজ করছি আবার গাছের ছায়ায় এসে বসছি। এভাবে তাপমাত্রার কথা বলছিলেন-চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এলাকার কৃষক মেছের আলী। চুয়াডাঙ্গায় সপ্তাহ জুড়ে টানা তাপপ্রবাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
এ জেলায় বইছে মাঝারি তাপপ্রাবাহ। তীব্র গরমে রোজাদারদের অবস্থাও ওষ্ঠাগত। আবহাওয়া অফিস বলছে সহজে দেখা মিলছেনা বৃষ্টির। সকালে সৃর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র রোদ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে। বিশেষ করে দুপুরের পর আগুন ঝরা রোদের তেজে বাইরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থা বিরাজ করছে সুর্য একেবারে পাটে পড়ার আগ পর্যন্ত।
চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে কষ্টে পড়েছে খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালক ও কৃষকেরা। তীব্র রোদে মাঠে টিকতে পারছেনা কৃষক ও দিনমজুর। রাস্তায় ভাড়া মারতে পারছেনা রিক্সা-ভ্যান চালকরা। প্রতিদিন সেচ দিতে হচ্ছে বোরো ধান ও সবজি ক্ষেতে। কৃষক আরিফুল বলেন, ধানে সেচ দিয়ে আর পারছিনা। দাম বেশি ডিজেলের। কিনতে গিয়ে আর পেরে উঠছিনা। আল্লাহ একটু পানি (বৃষ্টি) দিলে বাঁচতাম।
দিনমজুর আমিরুল মিন্টু বলেন, এতো রোদ মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। একটু কাজ করছি আবার ছায়ায় এসে বসছি। ভ্যান চালক ছাদেক আলী বলেন, রোদে সব পুড়ে যাচ্ছে। দুপুর বেলা মনে হচ্ছে আগুন বের হচ্ছে। রাস্তায় বের হওয়া যাচ্ছে না।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৭.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিল ১২%। বেলা ৩টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ০৯%। সোমবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। এটি দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এছাড়া গত সাতদিনও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হয়েছে। দুই তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, গত সোমবার জেলায় সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রী, রবিবার তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি, শনিবার ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি, শুক্রবার ৩৮ ডিগ্রি, বৃহস্পতিবার ৩৭.৫ ডিগ্রি, বুধবার ৩৭ ডিগ্রি, মঙ্গলবার ৩৭ ডিগ্রি, সোমবার ৩৫.৫ ডিগ্রি, রবিবার ৩৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হচ্ছে। গত দশদিন ধরে জেলায় সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। দুই তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
এএজেড