টেকনাফে অপহরণের শিকার আরও ২ কিশোর

কক্সবাজারের টেকনাফ পাহাড়ের ন্যাচারাল পার্ক এলাকায় ঘুরতে গিয়ে আরও ২ কিশোর অপহরণের শিকার হয়েছে। মুক্তিপণ আদায় করতে ওই ২ কিশোরকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
শনিবার (২৫ মার্চ) বিকাল ৪টার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া ন্যাচারাল পার্ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী।
অপহৃতরা হলেন- হ্নীলার মধ্যম দমদমিয়ার বাসিন্দা কবির আহমেদের ছেলে রিদুওয়ান সবুজ (১৭) ও একই এলাকার মৌলানা আবুল কালামের ছেলে নুরুল মোস্তফা (১৬)।
ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকায় অপহৃত মোহাম্মদ ছৈয়দকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হলেও একই দিন ওই এলাকা থেকে রহমত উল্লাহ নামের স্থানীয় একজন কৃষককে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ের দিকে নিয়ে যান দুর্বৃত্তরা। এ নিয়ে ৩ জনকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। তবে আজ রবিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো ধরনের মুক্তিপণের দাবি জানায়নি দুর্বৃত্তরা।
তিনি বলেন, অপহৃত কিশোররা ওই এলাকায় ঘুরতে গিয়ে পাহাড়ে থাকা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত হয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকালে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া পাহাড়ের ন্যাচারাল পার্ক এলাকায় ঘুরতে যায় স্থানীয় দুই কিশোর নুরুল মোস্তফা ও রিদুওয়ান সবুজ। একপর্যায়ে মুখোশ পরা একদল দুর্বৃত্ত তাদের অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যান। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের মুক্তিপণ দাবি করা হয়নি। এর আগেও হ্নীলার ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া, পানখালী ও মরিচ্চ্যাঘোনা এলাকা থেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের দাবিতে দুই কিশোরকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণের ঘটনায় পুরো ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকার লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাছির উদ্দিন মজুমদার জানান, হ্নীলার দমদমিয়ার ন্যাচারাল পার্কের পাহাড়ি এলাকা থেকে দুই কিশোরকে অপহরণের খবর স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছ থেকে জেনেছেন। তবে এখন পর্যন্ত ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তিনি বলেন, সম্প্রতি এ ধরনের ঘটনা বেড়েছে। পুলিশের তৎপরতায় কয়েকজনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় দুর্বৃত্তরা।
প্রসঙ্গত, গত ৬ মাসে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে প্রায় ৫২ জন ব্যক্তি অপহরণের শিকার হন। তাদের মধ্যে ৩৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকি ১৮ জন রোহিঙ্গা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এসজি
