সড়কে ভ্রাম্যমাণ দোকানের ছড়াছড়ি, ভোগান্তিতে পথচারীরা
নেত্রকোনা জেলা শহরের বিভিন্ন প্রধান সড়কে অবৈধ বাজারে ভ্রাম্যমাণ দোকানের ছড়াছড়ি। নেত্রকোনা বড়বাজার, ছোটবাজার, মোক্তার পাড়া, শহীদ মিনারের সামনে প্রধান সড়কের উপর প্রতিদিন এসব ভ্রাম্যমাণ দোকান বসে। ফলে প্রতিদিন ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। চলাচলে দুর্ভোগে পড়ছেন পথচারীরা।
সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বসে এ বাজার। এ বাজারে ভ্যানে বসে সবজি, মাছ ও মুদি দোকান। এ ছাড়া ঝুপড়ি ঘর করে চায়ের দোকান, ফলের দোকান ফুচকা-চটপটির দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। এ কারণে নেত্রকোনা জেলা শহরের প্রধান সড়কে যানজট লেগেই থাকে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নেত্রকোনা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আব্দুল হেলিম বলেন, বাজারটির সঙ্গে দলীয় কোনো সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, রাস্তায় চলাচলে সমস্যা হলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব। আমরা প্রতিদিনই তাদের উচ্ছেদ করি। তারপরেও তারা পেটের দায়ে এই সড়কের উপরে বাজার নিয়ে বসে। তাদের স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন সকাল থেকে ভ্যানে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে দোকান বসতে থাকে। বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে জমজমাট হয়ে উঠে বাজারটি। এসময় যানজটও বাড়তে থাকে। আরও দেখা যায়, সড়কটির মোড়ের ডান দিক দিয়ে রাজুর বাজার ও বামে অজহর রোড ও আখড়ার দিকে যাওয়ায় সারাক্ষণই ব্যস্ত থাকে এ সড়কটি।
বিভিন্ন স্থানে বাজার থাকার পরও ক্রেতারাও এ বাজারে আসে। সকাল ১০টায় পথচারী কামাল যাচ্ছিলেন এ পথ দিয়ে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভেতরের দিকে যাওয়ার জন্য একমাত্র রাস্তা এটি। রাস্তার পাশে বাজার বসে রাস্তাটি সরু হওয়ায় দুই লাইনে গাড়ি চলতে পারে না। তার মধ্যে রাস্তার পাশে এমন বাজার বসায় দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। আশপাশে বাজার থাকার পরও আমিও মাঝেমধ্যে এখানে বাজার করি। তাই বলে এই নয় যে, আমি রাস্তার উপর বাজার বসাকে সমর্থন করি।
অপর পথচারী আদিল মিয়া বলেন, সারা দিন অফিস করে বাসায় ফেরার পথে শহরের রাস্তাগুলোর যানজট মাড়িয়ে এসে রাস্তার প্রধান সড়কে যদি যানজট পাই, ব্যাপারটা সত্যি ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক। এটার প্রতিকার হওয়া জরুরি।
এ বাজারের বিক্রেতা জালাল উদ্দিন বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমাদের এত টাকা নেই যে, বাজারে একটা দোকান নিয়ে বসব। তাই পেটের দায়ে রাস্তার উপর বসি। পরিবারের ভরণপোষণের ভার আমার একার। তাই অভাবের তাড়নায় বসতে হয়।
আরেক বিক্রেতা শামীম বলেন, এখানে বেচাকেনা খুব ভালো। প্রায় সারা দিনই ক্রেতা থাকে। কয়েকদিন পরপর আমাদের তুলে দেওয়া হয়। তারপরও বসি, কারণ এখানে বসলে কিছু টাকা উপার্জন করা যায়। যানজট বাজারের জন্যই হয়। কিন্তু পেটের জন্য এখানে দোকান নিয়ে বসতে হয় আমাদের।
জেলা পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ জানান, ইতোমধ্যে যানজট নিরসনে গাড়ি চলাচলে কালারভিত্তিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে প্রতিদিন গাড়ি না চলে রুটিন মাফিক চলে।
এসজি