পূর্ব সুন্দরবনে আগাম মধু সংগ্রহ মৌসম শুরু
পূর্ব সুন্দরবনে গত ১৫ মার্চ থেকে মধু সংগ্রহের আগাম মৌসুম শুরু হলেও মৌয়ালরা বন বিভাগ থেকে মধু সংগ্রহের পাশ (অনুমতিপত্র) সংগ্রহ করেননি। এখন বনে গেলে কাঙ্ক্ষিত মধু পাওয়া যাবে না এমন ধারণা মৌয়ালদের (মধু সংগ্রহকারী)। অন্যান্য বছর পহেলা এপ্রিল থেকে মধু সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। ১৫ মার্চ আগাম মধু আহরণ মৌসুম শুরুর তারিখ ঘোষণা করে বন বিভাগ।
শরণখোলার বগী গ্রামের মৌয়াল মোসারেফ হোসেন, উত্তর সাউথখালী গ্রামের বাদল রহমান, শরণখোলা গ্রামের জালাল মোল্লা এবং খুড়িয়াখালী গ্রামের মধু ব্যবসায়ী রাসেল আহমেদ বয়াতি বলেন, বন বিভাগের পাশ নিয়ে প্রতি বছরের ১ এপ্রিল মধু আহরণের জন্য ৭০/৮০টি নৌকায় প্রায় সহস্রাধিক মৌয়াল সুন্দরবনের উদ্দেশে যাত্রা করে। কিন্ত সুন্দরবন বিভাগ ১৫ মার্চ থেকে মধু সংগ্রহের আগাম মৌসুম শুরুর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। বন বিভাগের এই সিদ্ধান্ত মৌয়ালদের অনুকূলে নয়, এখন বনে কাঙ্ক্ষিত মধু পাওয়া যাবে না। অনেক গাছে এখন মধুর চাক পুরোপুরি তৈরি হয়নি বলে ওই মৌয়ালরা জানান।
মৌয়ালরা জানান, পহেলা এপ্রিল থেকে বনে মধু পাওয়া যাবে। তাই তারা ওই সময়ে আগের নিয়মে সুন্দরবনে যাবেন।
এদিকে বন বিভাগ জানায়, সুন্দরবন থেকে মধু উৎপাদন ও এটা থেকে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বছর ১৫ মার্চ থেকে ৩০ জুন মাস পর্যন্ত মৌয়ালরা সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে পারবে। এক শ্রেণির লোক বন থেকে অবৈধভাবে মধু সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়ায় গত বছর ১৫ মার্চ থেকে আগাম মধু সংগ্রহের মৌসুম শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন বিভাগ।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মাদ বেলায়েত হোসেন বলেন, মৌয়ালরা যাতে বেশি মধু সংগ্রহ করতে পারে সেজন্য গত বছর থেকে মধু আহরণ মৌসুম ১৫ দিন এগিয়ে আনা হয়েছে এবং মৌয়ালদের ১৫ মার্চ থেকে আগাম মধু সংগ্রহের পাশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। এ বছর সুন্দরবন থেকে ৮০০ কুইন্টাল মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর ৬০০ কুইন্টাল মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মৌয়ালরা ২৮৮ কুইন্টাল মধু সংগ্রহ করতে পেরেছিল। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় গত মৌসুমে মধু কম হয়েছে।
এ ব্যাপারে শরণখোলা ফরেস্ট স্টেশন অফিসার মো. আসাদুজ্জামান জানান, সুন্দরবনে মধু আহরণের জন্য ১৪ মার্চ পর্যন্ত কেউ অনুমতি পত্র (পাশ) গ্রহণ করেননি। পূর্ব বন বিভাগের অন্যান্য স্টেশন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে কোনো মৌয়াল মধু সংগ্রহের পাশ গ্রহণ করেননি।
এসআইএইচ