উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীর বাবাকে মারধরের অভিযোগ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় উত্ত্যক্তকারী রনি আহমেদ (২০) ও তার লোকজনের হামলায় রক্তাক্ত হয়েছেন শিক্ষার্থীর বাবা অকিল চন্দ্র সরকার। এদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রাবাইটারী বসুনিয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা অকিল চন্দ্র সরকার বাদী হয়ে রবিবার (১২ মার্চ) ফুলবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওসি ফজলুর রহমান।
আহতরা বর্তমানে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতরা হলেন, অকিল চন্দ্র সরকার, মুকুল চন্দ্র সরকার, সুভাশীষ চন্দ্র সরকার, সুনীল চন্দ্র সরকার ও সতীর্থ কর্মকার। অপর গ্রুপের রনি আহমেদ, হাছেন আলী, শমসের আলী, হুমায়ুন আহমেদ ও জনি আলম। তাদের সবার বাড়ি ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রাবাইটারী বসুনিয়াপাড়ায়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, হাছেন আলীর ছেলে রনি আহমেদ ফেব্রুয়ারি মাস থেকে একই এলাকার নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় ফুল ও চিঠিপত্র দিতেন এবং বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথা বলে প্রায় সময় উত্ত্যক্ত করতেন। শনিবার বিকালে ওই স্কুল শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে তাকে জোরপূর্বক রাস্তার পাশে নিয়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টাসহ একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বখাটে কলেজ ছাত্র রনি আহমেদ। মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয় লোকজন সেখানে ছুটে এলে রনি আহমেদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ওই শিক্ষার্থীর বাবা অকিল চন্দ্র সরকার ও ভাই শুভশীষ সরকার উত্ত্যক্তকারী রনি আহমেদের কাছে প্রতিবাদ করলে রনি আহমেদ ক্ষিপ্ত হয়ে যান। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর বাবা ও স্বজনদের উপর উত্ত্যক্তকারী রনি আহমদে ও তার লোকজন হামলায় করেন। এতে শিক্ষার্থীর বাবা গুরুতর আহত হন। এতে উভয় পক্ষের ৫ জন করে মোট ১০ জন আহত হন।
এলাকাবাসী ৯৯৯-এ ফোন করে খবর দিলে ফুলবাড়ী থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সন্ধ্যায় স্থানীয়দের সহায়তা আহতদের ফুলবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে উভয় পক্ষের আহতরা ফুলবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে মেয়ের পক্ষের দুইজন ও ছেলের পক্ষের দুইজন আশঙ্কাজনক বলে দুই পক্ষের পরিবার জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীর বাবা অকিল চন্দ্র সরকার বলেন, রনি আহমেদ আমার মেয়েকে প্রায় সময় উত্ত্যক্ত করত। তার উত্ত্যক্তের কারণে আমার মেয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। আমরা শুধু উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু রনি আহমেদ ও তার লোকজন দ্রুত আমাদের উপর হামলা চালায়। আমি থানায় মামলা করেছি। পুলিশ এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি।
তবে অভিযুক্ত রনি আহমেদের দাবি তিনি ওই শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করেননি। তিনি বলেন, মেয়েটি আমার ছোট বোনের বান্ধবী। তাই প্রতিবেশী বোন হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারির দিন তাকে ফুল উপহার দিয়েছিলাম। মেয়েটির পরিবারের লোকজন কোনো কিছু যাছাইবাচাই না করেই আমার উপর হামলা করেন।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার (ওসি) ফজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ব্যাপারে শনিবার মেয়ের বাবা বাদী ৫ জনের বিরুদ্ধে নারী-শিশু আইন ও পেনালকোর্ড আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর -১৪। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুরো বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্তের পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছেন।
এসএন
