রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

নির্বাচন নিয়ে সাতক্ষীরার রাজনীতি- পর্ব ৩

‘ডোন্ট ডিস্টার্ব’ চুক্তিতে জামায়াতের বিভক্ত হওয়ার শঙ্কা!

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো বাকি ১০ মাস। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই গা-ঝাড়া দিয়ে মাঠে নামছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দেশের সর্ববৃহৎ দুই রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ-বিএনপি যখন একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত তখন ভোটের ছকে বদলে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী! পুরোনো রূপে আসছে নতুন চরিত্র।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। এর ৫ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নিবন্ধন বাতিলের পর ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২টি আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা। তবে সেবারের নির্বাচনে একটি আসনেও জয় পাইনি জামায়াত। এসবের মধ্যে গতবছর বিএনপির জোট ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে।

দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামীতে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মতো কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবে না তারা। ফলে প্রায় ২৪ বছরের রাজনৈতিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটেছে জামায়াত-বিএনপির। বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হওয়ায় কিছুটা হলেও ভারমুক্ত আওয়ামী লীগ। তবে জামায়াত, বিএনপিকে ছেড়ে দেওয়ায় নতুন করে ভাবাচ্ছে একযুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিকে। তবে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া জামায়াতের নির্বাচনের বড় পরিকল্পনা কি না সেটা নিয়ে রয়েছে ধুম্রজাল। নিবন্ধন হারানো এই সংগঠনটি বর্তমানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াত দল হিসেবে তাদের দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে জামায়াতের নেতারা অন্য কোনো নিবন্ধিত দলের প্রতীকে বা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারবেন। এতে আইনে কোনো বাধা নেই।

এসবের ভেতর দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ১২০টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। যে তালিকায় রয়েছে সাতক্ষীরার ৪টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীর নাম। একটি আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা না করলেও গোপনে জেলার ৪টি আসনেই নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

আসন ৪টিতে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, জাতীয় পার্টির দেবর-ভাবির বিরোধে বিভক্ত জাপার তৃণমূলের কোন্দলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জামায়াত তাদের একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনী মাঠে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে মরিয়া। যদি নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত জোটগত না হয়ে আলাদাভাবে অংশগ্রহণ করে তাহলে চর্তুমুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে সাতক্ষীরা সংসদীয় এলাকার ৪টি আসনে।

চার পর্বের ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে আজ থাকছে সাতক্ষীরার সংসদীয় এলাকার ৪টি আসনে জামায়াতের প্রার্থী ও দলটির আদ্যপ্রান্ত নিয়ে।

সাতক্ষীরা-১: সাতক্ষীরা-১ আসন তালা ও কলারোয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত। জামায়াতের পক্ষ থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহর নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আনসার আলী জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে এ আসন থেকে জয়লাভ করেন। এরপর অনুষ্ঠিতব্য কোনো সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে জয় পাইনি জামায়াতে ইসলামী। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনটি ফিরে পেতে গোপনে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

সাতক্ষীরা-২: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই আসনটি। সাতক্ষীরার ৪টি সংসদীয় এলাকার মধ্যে সাতক্ষীরা-২ আসনে জামায়াতের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। সর্বোচ্চ ৫ বার এই আসন থেকে জয়লাভ করেছে জামায়াত। তবে এ আসনে এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে কারও নাম ঘোষণা করেনি দলটি। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গতবারের মতো মুহাদ্দিস আব্দুল খালেককে পুনরায় জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে।

সাতক্ষীরা-৩: নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দেবহাটা উপজেলা ও কালিগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নকে আশাশুনি উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করার পর এ আসনে টানা তিন মেয়াদসহ ৪ বার আওয়ামী লীগ জয় পেলেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিনবার জয় পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে বিএনপি জোটের সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি-দেবহাটা ও কালিগঞ্জের আংশিক) আসনে জামায়াতের পক্ষ থেকে জেলা জামায়াতের আমির মুফতি রবিউল বাশারের নাম ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।

সাতক্ষীরা-৪: নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সাতক্ষীরা-৫ আসনের শ্যামনগর উপজেলাকে কালিগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করে সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিন্যস্ত করে নির্বাচন কমিশন। এরপর অনুষ্ঠিতব্য তিনটি সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় পেলেও এ আসনে জয় পায়নি জামায়াতে ইসলামী। তবে এই আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের প্রভাব থাকাই এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চর্তুমুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা-৪ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য গাজী নজরুল ইসলামের নাম ঘোষণা করেছে সংগঠনটি। গাজী নজরুল ইসলাম জামায়াতের জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির। তিনি ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন সাতক্ষীরা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে সাতক্ষীরা-৫ আসনকে সাতক্ষীরা-৪ আসনে বিন্যস্ত করার পর ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসেবে ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি সাতক্ষীরা-৪ আসনে পরাজিত হয়েছিলেন।

দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের কার্যক্রম ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীর ভাবনা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গতবছর জামায়াতের পক্ষ থেকে দেশের ৩০০ আসনের বিপরীতে ১২০ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। প্রকাশ্যে কোনো প্রচারণা না করলেও কৌশলগতভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তারা।

নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পর্কে তৃণমূলের জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জানান, জামায়াতে ইসলামীর পুরুষ সদস্যরা নারী সদস্যদের চেয়ে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে কিছুটা দূরে রয়েছেন। তারা গ্রাম থেকে মহল্লা পর্যায়ে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের সুসংগঠিত করছেন আর জামায়াতের নারী কর্মীরা এলাকাভিত্তিক নির্বাচনী বৈঠক করে চলেছেন। মূলত নারীদের মাঝে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীর পরিচয় করিয়ে দেওয়া সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য।

সাতক্ষীরার ৪টি আসনে জামায়াতের নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পর্কে তারা বলেন, আমাদের অধিকাংশ নেতা-কর্মী মামলায় জর্জরিত। এদের অনেকে এখনো জেলে রয়েছেন। এ কারণে আমরা কৌশল অবলম্বন করে আমাদের কার্যক্রম চালাচ্ছি। তবে তাদের নির্বাচনী কৌশল সম্পর্কে বিস্তর কোনো কিছু জানাতে রাজি হননি তারা।

তবে সূত্র বলছে, টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় সাতক্ষীরার ৪টি আসনে সরকার দলীয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরোধ রয়েছে। তার উপর দেশের বৃহৎ দুই রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ-বিএনপি একে অপরের দিকে কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত, জাপায় দেবর-ভাবির দ্বন্দ্বে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিভক্ত। আর সরকার দলীয় ও বিরোধী দলের এই কোন্দলে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রকাশ্য তৎপরতার চেয়ে অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতে গ্রামভিত্তিক কাজ করছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা।

জামায়াতে ইসলামীর এক সূত্র বলছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের সঙ্গে ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি করেছে জামায়াত। রাজনৈতিক কারণে চুক্তির বিষয়টিও জামায়াতের মাঠপর্যায়ের নেতারা সেভাবে জানে না। আর এটি নিয়ে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মাঝেও রয়েছে মতবিরোধ। আর এই মতবিরোধের কারণে দ্বাদশ নির্বাচনের আগেই বিভক্ত হয়ে যেতে পারে যুদ্ধাপরাধীর তকমা লাগা এই সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা।

ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি আসলে কী: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের সঙ্গে ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি করে জামায়াতে ইসলামী। চুক্তিটি হচ্ছে, ‘জামায়াতের পক্ষ থেকে এমন কোনো কর্মসূচিও গ্রহণ করা হবে না যাতে সরকারের উপর চাপ আসবে। তাহলে সরকারও হস্তক্ষেপ থেকে দূরে থাকবে।’ গত কয়েক বছরে জামায়াতের সাংগঠনিক কার্যক্রম সে কথারই প্রমাণ রাখে। আর সরকারও অতীতের কঠোর অবস্থান থেকে ফিরে এসেছে। চলমান আমিরের হস্তক্ষেপে রাজনৈতিক এমন দূরদর্শী নীতিকে জামায়াতের অনেক নেতারা সাদরে গ্রহণ করলেও জামায়াতের বড় একটি অংশের ক্ষোভ রয়েছে। যেটা জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের যেকোনো মুহূর্তে বিভক্ত করতে পারে।

জামায়াত নিয়ে সাধারণ মানুষের ভাবনা: সরকারের সঙ্গে জামায়াতের ডোন্ট ডিস্টার্ব চুক্তি যেমন সরকার দলীয় নেতাদের চিন্তার কারণ তেমনি সাধারণ জনগণের জন্য ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ জনগণের মাঝে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। তাদের ধারণা, এবারের নির্বাচনে জামায়াতের চুপ থাকা মোটেও ভালো লক্ষণ নই। তলে তলে সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে বিগত সময়ের মতো বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এই দলটি। যার সমস্যা পোহাতে হবে আমাদের মতো সাধারণ জনগণের।

তারা বলেন, প্রতিটা নির্বাচন জনগণের কাছে একটি আমেজ। তবে বিগত কয়েকটি সংসদ নির্বাচন থেকে এটি জনগণের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সাধারণ জনগণ চাই একটি অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত ভোটের মাধ্যমে জানাব। কিন্তু বিগত সময়ে রাজনৈতিক সংগঠনগুলো তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যেভাবে সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করেছে সেটার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে। এটাই জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কাছে সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা বলে জানান তারা।

সব মিলিয়ে সাতক্ষীরার রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কাছে জামায়াত একটি বড় ফ্যাক্ট। জেলার ৪টি আসনে রয়েছে জামায়াতের নির্দিষ্ট একটি ভোটব্যাংক। তবে ভাসমান ভোটার এবং নতুন ভোটার প্রতি নির্বাচনেই প্রভাব বিস্তার করে। যেটা ভাবনার কারণ হতে পারে জামায়াতে ইসলামীর জন্য। এ কারণে এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেকোনো দলের প্রার্থীকে জয় পেতে হলে তরুণ ও ভাসমান ভোটারদের সমর্থন লাগবে। অন্যথায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে জেলার সবকটি আসনে।

এসজি

Header Ad
Header Ad

বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন অনুষ্ঠিত বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, গত ১৫ বছরে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। এজন্য নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রার্থীদের, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের এবং যারা অনিয়মে যুক্ত ছিল, তাদের তদন্ত করে বিচার করতে হবে।

রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ফ্যাসিস্ট কাঠামোয় নিয়ে গেছে এবং মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে, যার দায় নির্বাচন কমিশনেরও রয়েছে।

বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—মনোনয়নপত্র জমা দিতে সশরীরে আসার বিধান প্রবর্তন, প্রার্থীদের হলফনামা যাচাই-বাছাই করে সত্যতা নিরূপণ, নির্বাচনে সহিংসতা রোধে আচরণবিধি সংস্কার, ঋণখেলাপিদের প্রার্থিতা বাতিল, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র মনিটরিং করা।

এছাড়া একই নামে একাধিক দলের নিবন্ধন, অফিসবিহীন দলকে বৈধতা দেওয়া এবং এসব বিষয়ে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। এনসিপি মনে করে, এসব বাস্তবায়ন না হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনুভা জাবীন।

Header Ad
Header Ad

এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল

ছবি: সংগৃহীত

চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনেই দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসীরা ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। ডলারপ্রতি ১২২ টাকা ধরে যার পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ৯৬৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

রেমিট্যান্সের বড় একটি অংশ এসেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে—৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো দিয়ে ৯ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এর আগেও চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশে এক মাসে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে—৩২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও যথাক্রমে ২১৯ কোটি ও ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা, ডলারের ভালো বিনিময় হার এবং রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে প্রবাসীদের বাড়তি পাঠানোর প্রবণতা—এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এপ্রিল শেষে এই প্রবাহ ৩৫০ কোটি ডলারের বেশি হতে পারে, যা নতুন একটি রেকর্ড হবে।

Header Ad
Header Ad

দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত

আজ রবিবার দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

কোনো ব্যক্তি যেন টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন—এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও বিএনপি বলছে, জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে চিরতরে প্রধানমন্ত্রিত্বের পথ বন্ধ করা উচিত নয়।

রোববার (২০ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “এক ব্যক্তি টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না—এই প্রস্তাবে বিএনপি একমত। তবে দুই মেয়াদের পর যদি জনগণ আবারও কাউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়, সেই সুযোগ রাখা উচিত। এক বছর বিরতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় কোনো বাধা থাকার কথা নয়।”

এ সময় তিনি আরও বলেন, “সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট। আমরা পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষে। তবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের বিষয়টিতে বিএনপি একমত নয়। এতদিন পর রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের যৌক্তিকতা আমরা দেখি না।”

তিনি জানান, মৌলিক অধিকার হিসেবে ইন্টারনেট অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবকে বিএনপি সমর্থন করছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “সব কিছু মৌলিক অধিকার না বানিয়ে, রাষ্ট্রের বাস্তব সামর্থ্য বিবেচনায় রেখে যা নিশ্চিত করা সম্ভব, সেটুকু করার আহ্বান জানিয়েছি।”

বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিহউল্লাহ, সাবেক সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

অন্যদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তার সঙ্গে ছিলেন সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

প্রসঙ্গত, বিএনপি গত বৃহস্পতিবারও ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি
এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল
দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত
ফাইয়াজের মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার নেই: আসিফ নজরুল
ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক ছাত্রীকে ৭ দিন ধরে আটকে ২৩ জন মিলে ধর্ষণ!
বিরামপুরে পিকআপের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী মিঠু গ্রেফতার
ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল মুসলিম সমাজ, হায়দ্রাবাদে গণবিক্ষোভ
ফকিরাপুলে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
আল-আকসা ভেঙে মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা ফাঁস, ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার দেবে চীন : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী
৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক হেফাজতে ইসলামের
আজ স্বামীর প্রশংসা করার দিন
ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় নিষিদ্ধ হলো সিনেমা
রাজধানীর ডেমরা ও মিরপুরে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বিএনপি
যশোরের শার্শায় অস্ত্রসহ দুই ছিনতাইকারী আটক
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: ট্রাইব্যুনালে সালমান, আনিসুল, দীপু মনি, পলকসহ ১৯ জন