খুলনায় চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, ভোগান্তিতে রোগীরা
খুলনায় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহর উপর হামলার প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি চলছে। বুধবার (১ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সকাল ৬টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চলবে। তবে জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। এদিকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।
চিকিৎসার জন্য মেয়েকে ডাক্তার দেখাতে বুধবার সকালে নড়াইলের দক্ষিণ মির্জাপুর থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে বিপাকে পড়েন জহিরুল ইসলাম। জহিরুলের মতো অসুস্থ বাবাকে
ডাক্তার দেখাতে খুলনার বটিয়াঘাটা থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসেন কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী মো. রাব্বি। হাসপাতালে আসার পর রাব্বি জানতে পারেন ডাক্তার নেই, তাদের কর্মবিরতি চলছে। আজ রোগী দেখবেন না তারা।
রাব্বি সাংবাদিকদের বলেন, শুনেছি রোগীর স্বজনরা ডাক্তারকে মেরেছে। একটা রোগীর জন্য তো হাজার রোগীর সমস্যা হতে পারে না। যে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তার বিচার হোক। আমার বাবা অসুস্থ। আমরা তো ভোগান্তিতে পড়েছি। এখানে কত লোক আসছে। একেক জনের একেক সমস্যা। আইন আছে, পুলিশ আছে, আদালত আছে তারা দেখবে। কিন্তু ডাক্তাররা কেন সাধারণ জনগণকে ভোগাবেন।
শুধু রাব্বিই নন, খুমেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখাতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন অসংখ্য রোগী ও তাদের স্বজনরা। রূপসা থেকে আসা মেহেদী হাসান বলেন, মাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছি। ভেবেছি ডাক্তার দেখিয়ে চলে যাব। কিন্তু এসে দেখি যারা সেবা দেবে তারা ধর্মঘট ডেকেছে। দেশে মানবিকতা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সেবার নামে তারা ধর্মঘট ডেকেছেন।
নিরালা থেকে আসা রোগী আকরাম হোসেন বলেন, কোমরে ব্যথা। ডাক্তার দেখাতে না পেরে এখন ফিরে যেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিএমএ’র খুলনা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর শেখপাড়া এলাকার হক নার্সিং হোমের অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নাঈম (সাতক্ষীরা সদরে কর্মরত) ও তার সঙ্গীরা ডা. শেখ নিশাত আবদুল্লাহকে মারধর করেন। এছাড়া অপারেশন থিয়েটারে ভাঙচুর চালায় তারা। এক মাস আগে অপারেশন করা রোগীর জটিলতার কথা বলে তারা এই হামলা চালায়।
তিনি আরও বলেন, ডা. নিশাত বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে এ মামলায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। আসামি গ্রেপ্তার হলে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখা। এরই অংশ হিসেবে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার সকাল ১০টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে চিকিৎসকরা।
এসআইএইচ