উদ্ধারের ৩ দিন পর গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী

রংপুরে উদ্ধারের ৩ দিন পর বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হ্যান্ড গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করেছে সেনাবাহিনী। রংপুর নগরীর দমদমা ব্রিজের নিচে ঘাঘট নদ থেকে উদ্ধার হওয়া গ্রেনেডটি সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করেছে সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
সেনাবাহিনীর বিশেষ বোম্ব ডিসপোজাল টিম দমদমা বধ্যভূমির অদূরে গর্ত খুঁড়ে গ্রেনেডটি মাটিচাপা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর বিস্ফোরণ ঘটায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের।
তিনি বলেন, গত শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) নগরীর দমদমা ব্রিজের নিচে ঘাঘট নদে গোসল করতে নেমে তাহমিনা নামের এক গৃহবধূ ওই গ্রেনেডটি পেয়ে প্রথমে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে থানায় জানান। খবর পেয়ে গ্রেনেডটি উদ্ধার করে বধ্যভূমির পাশে পুলিশি পাহারায় সংরক্ষণে রাখা হয়। আদালতের আদেশসহ সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে বিষয়টি জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, সোমবার সকাল ৯টার দিকে সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে। তারা গ্রেনেডটি ২ ঘণ্টা ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে দমদমা বধ্যভূমির অদূরে একটি খোলা স্থানে গর্ত করে গ্রেনেডটি মাটিতে চাপা দিয়ে রাখা হয়। এর কিছুক্ষণ পর বেলা ১১টার দিকে তারা বিশেষ পদ্ধতিতে গ্রেনেডটির বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় পুরো এলাকা সাময়িক সময়ের জন্য ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়।
গ্রেনেড উদ্ধারকারী স্থানীয় তাহমিনা নামের ওই গৃহবধূ বলেন, শুক্রবার দুপুরে গোসল করতে ঘাঘট নদে নামলে পায়ের নিচে কিছু একটা অনুভব হয়। এরপর তুলে লোহার বস্তু মনে করে সেটি ভালো করে পরিষ্কার করি। পরে বাজারের একটি দোকানে পরিমাপ যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য নিয়ে যাই। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তা গরম হতে থাকলে আশপাশের লোকজন বলছিল এটি গ্রেনেড বোমা।
তিনি আরও বলেন, আমি আনসারের ট্রেনিংয়ের সময় এমন হ্যান্ড গ্রেনেড দেখেছিলাম। তাই এটিকে পরবর্তীতে পানিতে রেখে দিই। এরপর ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি অবগত করলে পুলিশ এসে বোমাটি উদ্ধার করে তাদের পাহারায় রেখে দেয়।
ওসি নাজমুল কাদের জানান, উদ্ধার হওয়া গ্রেনেডটি মুক্তিযুদ্ধের সময়কার। মুক্তিযুদ্ধের সময় দমদমা এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র হাজার হাজার মানুষকে ধরে এনে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যা করেছিল। সরকারিভাবে দমদমার এ এলাকাটি একাত্তরের বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত।
এসজি
