বাড়ি ফিরেছে কনটেইনারে মালয়েশিয়ায় যাওয়া রাতুল

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কনটেইনারে মালয়েশিয়ায় চলেও যাওয়া কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোর মো. রাতুল ইসলাম (১৪) অবশেষে বাড়ি ফিরেছে। গত বুধবার রাতে রাতুল মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামে তার বাড়িতে পৌঁছায়। দীর্ঘদিন পর ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুশিতে আত্মহতারা রাতুলের মা-বাবাসহ স্বজনরা।
এর আগে সরকারি সহায়তায় ২১ ফেব্রুয়ারি-মঙ্গলবার রাতে একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় রাতুল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার মা-বাবাসহ পরিবরের সদস্যরা। প্রায় ৪ মাস পর হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে পেয়ে আবেগাপ্লুত সবাই। বিমানবন্দরে তৈরি হয় এক আবেগঘন মুহূর্ত। ওই দিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাতুলকে তার পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়। এরপর ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার রাতে বাড়ি ফিরেন তারা।
এদিকে রাতুলকে নিয়ে বাড়ি আসার পর তাদের বাড়িতে ভির জমাতে থাকেন আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ। তাকে একনজর দেখে জানতে চান, কিভাবে এতোদূর চলে গেলো সে। কিন্তু রাতুল কিছুই বলতে পারছে না।
জানতে চাইলে রাতুলের বাবা মো. ফারুক মিয়া বলেন ছেলেকে ফিরে পেয়েছি, এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু নাই। এজন্য বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
পেশায় দিনমজুর ফারুক মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, তার তিন ছেলের মধ্যে রাতুল সবার বড়। গত বছরের ১৩ নভেম্বর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় রাতুল। পরে তাঁরা গত ২০ জানুয়ারি জানতে পারেন রাতুল মালয়েশিয়ায় আছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া 'এমভি ইন্টেগ্রা' জাহাজের একটি খালি কনটেইনার মালেশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ১৬ জানুয়ারি মালেশিয়ার কেলাং বন্দরে জাহাজের একটি খালি কনটেইনারের ভেতর থেকে মানুষের শব্দ শুনতে পান নাবিকরা।
এরপরই কেলাং বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান তারা। ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কনটেইনার খুলে ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাকে রোহিঙ্গা বলে ধারণা করে সেখানকার সকলে।
পরবর্তীতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও দেখে রাতুলকে শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর থেকে রাতুলের ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলেন স্বজনরা। অবশেষে প্রায় চারমাস পর বাড়ি ফিরলো রাতুল। তাকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা রাতুলের মা বললেন, আমার ছেলে আমার কাছে ফিরে এসেছে। আর চাওয়ার কিছু নেই।
এএজেড
