বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে শ্রমিকদের সাড়ে ৫ ঘন্টা কর্মবিরতি

দেশের একমাত্র চর্তুদেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ট্যারিফ বৃদ্ধির হিস্যার দাবীতে দীর্ঘ সাড়ে ৫ ঘন্টা ধরে কর্মবিরতি পালন করেছে স্থলবন্দরে কর্মরত শ্রমিকেরা। শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বন্দরে অবস্থান করা পরিবহন থেকে পন্য ওঠানামা কার্যক্রম থেকে কর্মবিরতি পালন করে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়ন নামে দুইটি শ্রমিক সংগঠন। বন্দরে বাড়তে থাকে পন্য নিয়ে আসা গাড়ির সংখ্যা।
সড়কের দুই পাড়ে গাড়ি রাখায় যানচলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পন্য ওঠানামা বন্ধ থাকায় শুরু হয় অচলাবস্থা। পরে দুপুরে শ্রমিক সংগঠন দুইটির নেতাদের সঙ্গে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের দীর্ঘ আলোচনা হয়। পরে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবী মেনে নিলে আবারো কাজে যোগ দেয় শ্রমিক সংগঠন দুইটির সদস্যরা।
আলোচনায় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পন্য ওঠানামা কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান আবতাহী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের (এটিআই) প্রতিনিধি হাসান আলী, বাংলাবান্ধা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইদ্রিস আলী, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম রইসুল, সাধারণ সম্পাদক কলিম উদ্দীন সহ স্থলবন্দরের কর্মকর্তারা সহ শ্রমিক সংগঠন দুইটির সদস্যরা।
শ্রমিক সংগঠন দুইটি সূত্রে জানা যায়, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভূটানে পন্য আমদানি রপ্তানী কাজে আসা গাড়ি থেকে পন্য ওঠানামার জন্য প্রতিবছর সরকার একটি নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করে দেন। বন্দরে সেবার মান বাড়াতে সেই ফি প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়। চলতি বছরেও সরকার দুই বছরের জন্য একই হারে ফি বাড়িয়েছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারী শ্রমিক সংগঠন দুইটির পক্ষ থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পন্য ওঠানামা কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান আবতাহী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালকে (এটিআই) মৌখিকভাবে জানালেও তারা কোন কর্ণপাত করেননি। উল্টো শ্রমিকদের ট্যারিফের হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে।
পরে এ নিয়ে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সহ বন্দর সংশ্লিষ্টদের বরাবরে একটি চিঠি দেয় শ্রমিক সংগঠন দুইটি। চিঠিতে বলা হয় ১৬ই ফেব্রুয়ারীর মধ্যে শ্রমকিদের দাবী মেনে না নিলে ১৮ তারিখ থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুশিঁয়ারী দেয় শ্রমিক সংগঠন দুইটি। তবে বেধেঁ দেয়া সময়েও দাবী না মানায় এরই প্রতিবাদে ট্যারিফের হিস্যা চেয়ে শনিবার সকাল থেকে কর্মবিরতিতে যায় শ্রমিক সংগঠন দুইটির সদস্যরা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বন্দরে আমদানী ও রপ্তানি কাজে সেবার মান বাড়াতে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিবছরই ৫ শতাংশ হারে ট্যারিফ বৃদ্ধি করে। সেই ফির অর্থ বন্দরের ট্রাফিক ব্যবস্থা, বন্দর উন্নয়ন সহ নানা সুযোগ সুবিধা বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। সেই ফি হতে প্রতিবছরই একটি অংশ দেয়া হতো শ্রমিকদের। এ কাজটি পরিচালনা করেন আবতাহী ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল (এটিআই) নামে একটি প্রতিষ্ঠান। মূলত শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে তারা। তবে চলতি বছর এ ফি বাড়ায়নি প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাবান্ধা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইদ্রিস আলী বলেন, সরকার আমাদের জন্য ট্যারিফের একটি অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছে। সেই ফি বাড়ানো হলে আমরাও অংশ পেতাম। এবার দুই বছরের জন্য সরকার ৫ শতাংশ হারে ফি বাড়ানো হলেও এটিআই আমাদের সেই হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে। আমরা তাদের সময় বেধেঁ দিলেও তারা মানেনি। ফলে আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হই। পরে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও এটিআই আমাদের দাবী মেনে নিলে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগদান করি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, শ্রমিকদের সাথে আমরা আলোচনায় বসেছি। তাদের আমরা ট্যারিফের হিস্যা দেয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছি। পরে তারা কাজে যোগদান করেন।
এএজেড
