'ভ্যাট ও ট্যাক্সের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ফাঁকির প্রবণতা বাড়ে'

রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে রংপুরের ব্যবসায়ীদের ভ্যাট ও কর প্রদান সম্পর্কিত উদ্ভূত বিভিন্ন সমস্যা নিরসনকল্পে এক মত বিনিময় রংপুর চেম্বার ভবনের আরসিসিআই অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। মত বিনিময় সভায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, ভ্যাট ও ট্যাক্সের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ভ্যাট ও ট্যাক্স ফাঁকির প্রবণতা বাড়ে-তাই তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ভ্যাট ও করনেট বৃদ্ধি করে সহনীয় পর্যায়ে বন্ধুসুলভ আচরণের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায়ের আহ্বান জানান।
ব্যবসায়ীরা ভোক্তার কাছ থেকে ভ্যাট কালেকশন করে ভ্যাট আদায়ে সরকারকে সহযোগিতা করে তারপরও ব্যবসায়ীদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে এটা মেনে নেওয়া যায় না বলে ব্যবসায়ীরা নেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ভ্যাটের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অহেতুকভাবে অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের খাতাপত্র আটক, হয়রানি ও নোটিশ দিয়ে যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে তা স্থিতিশীল ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সহায়ক নয় বলে মতামত ব্যক্ত করেন।
রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট রংপুরের কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস ও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কর অঞ্চল রংপুরের কর কমিশনার মোঃ শাহীন আক্তার হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট রংপুরের কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সৎ ব্যবসায়ীরা ভ্যাট দিচ্ছে আর অসৎ ব্যবসায়ীরা ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। এর ফলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় ঝুঁকির মুখে পড়ছে। তাই তিনি ভ্যাট ফাঁকির প্রবণতা রোধ ও তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ভ্যাটের আওতা সম্প্রসারিত করার পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ কর্মশালা, সভা, সেমিনারের মাধ্যমে ভ্যাটদাতাদেরকে উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন মর্মে উপস্থিত ব্যবসায়ীদেরকে আশ্বাস প্রদান করেন।
অতিথির বক্তব্যে কর অঞ্চল রংপুরের কর কমিশনার মোঃ শাহীন আক্তার হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীরা ভ্যাট ও ট্যাক্সের মূল উৎস। আয়কর দেশের অর্থনীতির অভ্যন্তরীণ চালিকাশক্তি। গত এক দশকে অর্থনীতির আকার যে হারে বেড়েছে, সেই হারে রাজস্ব আদায় বাড়ছে না। তাই তিনি উপস্থিত ব্যবসায়ীদেরকে ভীতিমুক্ত পরিবেশে স্বেচ্ছায় আয়কর প্রদান করে দেশকে সমৃদ্ধ করার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি পর্যায়ক্রমে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে করনেট বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।
সভাপতির বক্তব্যে রংপুরের চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, যারা নিয়মিত ভ্যাট –ট্যাক্স দিচ্ছে তাদের হয়রানি না করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ভ্যাট ও ট্যাক্সের নতুন নতুন ক্ষেত্র শনাক্ত করে তাদেরকে করের আওতায় আনতে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান। এছাড়া ভ্যাটের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের খাতাপত্র আটক, হয়রানি ও নোটিশ দিয়ে যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে তা বন্ধের আহ্বান জানান।
রাজস্ব আহরণের স্বার্থে তিনি উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ের ব্যবসায়ীদেরকে ভ্যাট ও ট্যাক্সের আওতায় আনতে ভ্যাট ও কর বিভাগকে রংপুর চেম্বারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর চেম্বারের কর্মকর্তা ও পরিচালকবৃন্দ, রংপুরের বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ ও আমদানি-রপ্তানিকারকবৃন্দ। এএজেড
এএজেড
