‘মা কোথায়, আমার মাকে এনে দাও’
জয়পুরহাটের সদর হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে মায়ের জন্য আর্তনাদ করছেন এসএসসি পরীক্ষার্থী বৃষ্টি আক্তার। তিনি চিৎকার করে বলছেন, ‘মা কোথায় আমাকে এনে দাও! আমি মায়ের বুকে যাব।’
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল বটতলীর মালিপাড়া গ্রামের মোড়ে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিক্শার মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ক্ষেতলাল উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা লায়লা জাহান নাসরিন।
শাহনাজ পারভিন তার মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী বৃষ্টিকে জয়পুরহাট শহরের নিউক্লিয়াস কোচিং সেন্টার রাখতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ক্ষেতলালে বাড়ি ফিরছিলেন। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি। মায়ের মৃত্যু খবর শুনে ছুটে এসে হাসপাতাল জুড়ে মায়ের জন্য আর্তনাদ করছেন বৃষ্টি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাট থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী সিএনজি ও জয়পুরহাটগামী একটি ট্রাক ক্ষেতলাল পৌর এলাকার মালিপাড়া মোড়ে পৌঁছালে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অটোরিকশাচালকসহ ৫ যাত্রী নিহত হন। নিহতরা হলেন- ক্ষেতলাল উপজেলার ইটাখোলা বাজারের রবিয়ার ছেলে সিএনজি অটোরিকশার চালক আমজাদ হোসেন (৫০), রইচ উদ্দীন বুলবুলের স্ত্রী শাহনাজ পারভিন (৪২), শাখারুন্জ চৌধুরী পাড়া গ্রামের রফিকুলের ছেলে নাফিস (২১), নসিরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের ইমাম ধামুরহাটের সিরাজুল ইসলাম (৬০) এবং জয়পুরহাট বুলুপাড়া গ্রামের ফেরদৌসের স্ত্রী ক্ষেতলাল বিআরডিবির ফিল্ড অফিসার শাহিনুর (৩৮)।
স্থানীয়রা জানায়, ঘটনাস্থলেই অটোরিকশা চালক আমজাদ হোসেনসহ এক যাত্রী নিহত হন। বাকি চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দুইজনকে ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় এবং দুজনকে জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তাদের মধ্যে আরও তিনজন মারা যান।
ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ক্ষেতলাল থানাধীন মালিপাড়া এলাকায় ট্রাক সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সিএনজিতে থাকা ৬ জনার মধ্যে ঘটনাস্থলেই ২ জন নিহত হয়। বাঁকি চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করালে আরও তিনজনসহ মোট পাঁচজন নিহত হয়। এ ঘটনায় ট্রাকচালক পলাতক।
এসএন