পয়ারী গ্রামে ৫০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে তেঁতুল গাছটি

পয়ারী গ্রামে ৫০০ বছরের একটি প্রাচীন তেঁতুল গাছটি দেখতে দিন দিন মানুষের ভিড় বাড়ছে। গাছটি ঘিরে পয়ারী গ্রামের মানুষের মাঝে রয়েছে নানা কৌতুহল। মাগুরা সদরের সীমান্তে রয়েছে শত্রুজিতপুর ইউনিয়ন।
লোকমুখে শোনা যায়, এ গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে নবগঙ্গা নদী। এ নদীর একটি খাল পয়ারী গ্রামের তেঁতুল গাছের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়ে ছিল। তখনকার সময়ে এ তেঁতুল গাছ ঘিরে নানা ধরনের পূজা ও মেলা হতো। পয়ারী গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ আসত এ স্থানে।
এ গ্রামের বাসিন্দা জগনাথ বিশ্বাস বলেন, আমাদের গ্রামে এ তেঁতুল গাছটির বয়স প্রায় ৫০০ বছর। আমার পূর্ব পূরুষেরা এ গাছ দেখে গেছেন। প্রতি বছরই এ গাছে প্রচুর তেঁতুল ধরে। তেতুঁলগুলো দেখতে খবুই লম্বা ও খেতে খবুই সুস্বাদু। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শেষের দিকে এ তেঁতুল গাছের ফল বিক্রি করে শিবের পূজা হয়। পাশাপশি হয় মেলা। মাগুরাসহ বিভিন্ন স্থানের ভক্তরা এ পূজায় আসেন। একটা উৎসবের আমেজ তৈরি হয় গ্রামে। এ গাছে রয়েছে অনেক প্রজাতির পরগাছা। এগুলোর কারণে গাছটি দেখতে আরও সুন্দর লাগে।
স্থানীয় সরবিন্দু ও নিশ্চিত সিংহ বলেন, আমাদের তেঁতুল গাছটির বয়স ৫০০0 অথবা তারও বেশি। বর্তমানে এ গাছ আমাদের গ্রামের গর্ব। প্রতি বছর এখানে পূজা হয়। মেলা বসে। মাগুরাসহ ঢাকা, খুলনা, সাতক্ষীরা, নড়াইল ও ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মানুষও এ গাছ দেখতে আসে। এখন এ গাছের অনেক শাখা-প্রশাখা হয়েছে। গরমের সময় এ গাছ পথিকের বিশ্রাম দেয়। আমরা চাই কর্তৃপক্ষ যদি এ গাছের চারপাশে গোল করে বসার ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে সবার জন্য ভালো হয়।
এলাকার সমীর বিশ্বাস বলেন, এটি একটি প্রাচীন গাছ। আমাদের পয়ারী গ্রামে এ রকম প্রাচীন গাছ আর নেই। আমাদের এলাকার হাজারী মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ১৬০ বছর পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। তিনি এ গাছ দেখে গেছেন। তবে তিনিও বলতে পারেননি গাছটি কে রোপন করেছিলেন। তবে তিনি বলেন, তার পূর্ব পুরুষরাও এ গাছ দেখে গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, গাছটির সামেন একটি মন্দির রয়েছে। প্রতি বছর এখানে চৈত্র মাসে শিবের পূজা হয়। পাশপাশি কাত্যায়নী পূজা, কালি পূজা হয়। দূর-দূরান্তের অনেক দর্শনার্থী এ প্রাচীন তেঁতুল গাছ দেখতে আসে। ছবি তোলে। কেউবা বিশ্রাম নেয়। প্রাচীন এ গাছটি নিয়ে আমরা গর্ব করি।
পয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দিবাকর বিশ্বাস বলেন, আমার বাড়ি এ প্রাচীন তেঁতুল গাছসংলগ্ন। আমি আমার বাবার কাছ থেকে এ গাছের কথা শুনেছি। আগে এ গাছের পাশ দিয়ে ছিল একটি খাল। বর্তমানে সেটি আর নেই। প্রাচীনকালে কেউ একজন ব্যক্তি কোনো ভালো উদ্দেশ্যে হয়তো এটি রোপন করেছিলেন। প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তিতে পূজা হয়, দেশের নানা প্রান্তের দর্শনার্থী পূজা দেখতে আসে। পাশাপাশি প্রাচীন এ গাছ দেখতে প্রায় প্রতিদিনই গ্রামে মানুষের ভিড় দেখা যায়।
এসএন
