স্বেচ্ছায় কক্সবাজার থেকে বদলি হতে মরিয়া পুলিশ সদস্যরা
স্বেচ্ছায় কক্সবাজার থেকে অন্যত্রে বদলি হতে চান প্রায় শতাধিক পুলিশ সদস্য। নিজেদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ১১০ জন কনস্টেবলকে বদলি করা হয়েছে। এবার আরও শতাধিক কনস্টেবল বদলির জন্য আবেদন করেছেন। মূলত বাড়ি থেকে অনেক দূরে ও কক্সবাজারে জীবনযাত্রায় অত্যধিক ব্যয়ের কারণে বদলি হতে চান তারা।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টেকনাফে পুলিশের গুলিতে বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনার জের ধরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে জেলা পুলিশের সব সদস্যকে একযোগে বদলি করা হয়। একই সময় নতুন করে পদায়ন করা হয় পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৫০০ সদস্য। নতুন করে পদায়ন হওয়া পুলিশ সদস্যদের অধিকাংশের বাড়ি দেশের দূর-দূরান্তে। তাই নিজের জেলার কাছাকাছি যেতে স্বেচ্ছায় বদলি হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর কক্সবাজার জেলায় দায়িত্বরত পুলিশের ১১০ সদস্য স্বেচ্ছায় আবেদন করে গত ১১ জানুয়ারি একযোগে বদলি হয়েছেন। বর্তমানে আরও বেশ কিছু বদলির আবেদন জমা পড়েছে।
তিনি জানান, দূর-দূরান্তের জেলা থেকে কক্সবাজারে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা এখানে দায়িত্ব পালন করতে অনাগ্রহী। নিজ জেলা থেকে অনেক বেশি দূরত্ব এবং কক্সবাজারে জীবনযাত্রার ব্যয় বেশি হওয়ায় এ অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে। ফলে স্বেচ্ছায় বদলি হতে আবেদন করছেন তারা। এর মধ্যে যারা ২ বছরের বেশি সময় ধরে কক্সবাজারে কর্মরত ছিলেন এমন ১১০ কনস্টেবলকে সম্প্রতি বদলি করা হয়েছে। জমা হওয়া আরও বেশকিছু আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশের বিধিমালার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বছরে স্বাভাবিক ২০ দিনের ছুটি পায়। যে ছুটিগুলো ৫ দিন করে চার ভাগে কাটানো যায়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে ৫ দিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে ৩-৪ দিন সময় চলে যায়। এতে আর বাড়ি থাকা হয় না তাদের। এ ছাড়া অতি দূর হওয়ায় কোনো জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। বাড়িতে আসা যাওয়া করতেও বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় হয়।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, যারা বদলি হয়েছেন এবং নতুন করে আবেদন করেছেন তাদের সবারই বদলির সময় হয়েছে। তাই পুলিশ বিধান মতে তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
এসজি