নড়াইলে হুমকির মুখে চিংড়ি চাষ

খাবারের দাম বৃদ্ধি এবং চিংড়ির বাজার দাম কমে যাওয়ায় নড়াইলে চিংড়ি চাষ এখন হুমকির মুখে। চিংড়ি চাষে রীতিমতো হতাশ এই জেলার চাষীরা। ধারণা করা হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই ৯০ শতাংশ চাষি বন্ধ করে দিবেন চিংড়ি চাষ।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার তিনটি উপজেলাতে মোট ৫ হাজার ৩০০’র বেশি ঘের রয়েছে। এসব ঘেরে মূলত গলদা চিংড়ি চাষ করা হয়ে থাকে। সাদা মাছের সঙ্গেও চাষ হয় চিংড়ি। বাজারে এই চিংড়ির চাহিদাও ব্যাপক।
চিংড়ি চাষিরা জানান, করোনার পর থেকে দ্রব্যমূল্যের দাম অনেক বাড়তি। আগে যে খাবার কিনেছেন ১০০০-১০৫০ টাকায় সেই খাবার এখন কিনতে হচ্ছে ১৪৫০ টাকায়। বাকি নিলে প্রতি বস্তায় আরো ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দিতে হয়। অন্যদিকে আগে যে চিংড়ি বিক্রি করেছেন ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় সেই চিংড়ি এখন বিক্রি করছি ৫৮০ টাকায়। ফলে প্রত্যেক চাষি ক্ষতিগ্রস্ত। প্রত্যেকের ঋণের বোঝা বাড়ছে। অধিকাংশ চাষি চিংড়ি চাষ বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনাও করছেন। এ ছাড়াও চিংড়ির উৎপাদন বেশি হলে তখন পাইকারি ক্রেতারা এক হয়ে দাম কমিয়ে দেয়। এ অবস্থায় খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলে নড়াইলে চিংড়ি চাষ করে ভালো কিছু করতে পারবেন চাষিরা।
এদিকে চিংড়ি কিনতে আসা পাইকাররাও লসে আছেন জানিয়ে বলেন, তারা যেসব কোম্পানিতে চিংড়ি দেন সেখানে ভালো দাম পাচ্ছেন না। তাদের চাহিদাও আগের মতো নেই। চাহিদা না থাকায় দাম কম।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচ.এম. বদরুজ্জামান বলেন, নড়াইলের পানি মিঠা হওয়ায় এখানে গলদা চিংড়ি বেশি চাষ হয়। এই চিংড়ি খুবই সুস্বাদু। এখান থেকে এক্সপোর্ট চ্যানেল বাদেও দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে এই চিংড়ি যায়। চিংড়ির দাম মূলত রপ্তানির সঙ্গে জড়িত। চাহিদা বেশি থাকলে দামও বেশি হয়। চাহিদা কম হলে দামও কমে যায়। চিংড়ির প্যাকেটজাত খাবারের অধিকাংশ বাইরে থেকে আসে। বৈশ্বিক কারণে সবকিছুরই দাম বেড়েছে। ফলে চাষিদের খরচও বেড়েছে। তবে আমরা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি বাড়িতে তৈরি খাবার চিংড়িকে খাওয়ানোর জন্য।
