২ বিচারকের বিরুদ্ধে অনড় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা
প্রাণ ফিরেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত প্রাঙ্গণে। আইনজীবীদের টানা আদালত বর্জন কর্মসূচি শেষে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে প্রতিটি আদালতের এজলাসে। তবে জেলা জজের আদালত এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ আদালতে যাননি আইনজীবীরা।
আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠকের পর আদালত বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতি। ফলে রবিবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে জেলা জজের আদালত এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ আদালত ব্যতীত সকল আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেন আইনজীবীরা।
এতে করে বিচারপ্রার্থীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা জানান, এতদিন কোর্ট বন্ধ থাকায় তাদের অর্থ ও সময় উভয় নষ্ট হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবে আবারও আদালতের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হওয়ায় তাদের আর হতাশ হয়ে ফিরতে হবে না।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মো. তানভীর ভুইয়া জানান, আইনজীবীদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়ায় রবিবার থেকে আইনজীবীরা আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নিচ্ছেন। তবে জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারকের বদলির আগ পর্যন্ত তাদের আদালত বর্জন অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া নাজির মোমিনুল ইসলামকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বদলি করা হবে। যদি আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে ওই দুই বিচারকসহ নাজিরকে অপসারণ করা না হয় তাহলে সাধারণ সভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, আইনজীবীরা আদালতের বিচারিক কাজে অংশ নিচ্ছেন। এতে করে বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে আইনজীবীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সমিতির সভা করে আইনজীবীরা ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়।
এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারীরা। এ অবস্থায় জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এবং আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন আইনজীবীরা। এ ছাড়া বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অশালীন স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ আইনজীবীকে দু’দফায় তলব করেছে উচ্চ আদালত।
এসজি