জমির শত্রুতায় কাটা পড়ল সহস্রধিক ফলজ গাছ
বরগুনায় জমি নিয়ে বিরোধীতার জেরে এক হাজারেরও বেশী ফলজ গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার হেউলীবুনিয়া এলাকায় ইহান পল্লী নামের একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বিকাল থেকে শুরু করে শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত প্রতিপক্ষরা এসব গাছ কেটে ফেলে। বিরোধীয় ওই জমির ক্রয় সূত্রে মালিক আরিফ খান এ অভিযোগ করেন। সরেজমিনে এর সত্যতাও মিলেছে।
আরিফ খান জানান, ১০ বছর আগে স্থানীয় রহিম মিয়া ও আবু জাফরের কাছ থেকে দুই একর ২০ শতাংশ জমি সাফ কবলা ক্রয় করে এক একরেরও বেশী জমিতে তিনি ইহান পল্লী নামের একটি খামার গড়ে তুলেন। পল্লীর ভেতর পুকুর খনন করে চারপাশ ঘিরে দেশীয় ফলজ গাছ রোপন করেন।
এদিকে জমি কেনার তিনবছর পর স্থানীয় জাফর হোসেন নামের এক ব্যক্তি জমি দাবি করে বিক্রেতা আবদুর রহিম ও আবু জাফরকে বিবাদি করে বরগুনা আদালতে পরপর দুটি মামলা করেছিলেন। আদালত দুটি মামলা খারিজ করে দেয়। মামলায় হারার পর বাদি জাফর হোসেন বিবাদীদের সাথে আপোষ মিমাংসা করে পল্লীর দেখভাল করার দায়িত্ব নেয়।
অপরদিকে গত বছরের মার্চে জাফর গোপনে তার চাচাত ভাই জাকিরকে বাদি করে ফের বরগুনা আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় ১ থেকে ১৭ নম্বার পর্যন্ত বিবাদি তারা নিজেরাই। মাত্র ১১ মাসে আদালত মামলার বাদি জাকির হোসেনের পক্ষে একতরফা রায় দেয়। রায়ের পর শুক্রবার বিকালে জাফর, জাকির, হারুন, শাহ আলম ও তার ছেলে সানি ইহান পল্লীর ভেতরের এক হাজারেরও বেশী গাছ কেটে ফেলে।
আরিফ খান বলেন, আদালত এক তরফা রায় দেয়ার খবর জেনে আমরা আপিল করেছি। রবিবার আপিলের শুনানী হবে। আপিলে তাদের রায় টিকববেনা জেনেই এভাবে আমার রোপন করা ফলজ গাছগুলো কেটে ফেলেছে প্রতিপক্ষ।
তিনি আরও বলেন, আমি কয়েক বছর ধরে আম, জাম, আমলকি, জলপাই, কামরাঙা, চালতা সহ কয়েক হাজার দেশীয় ফলদ গাছ রোপন করেছিলাম। সেই গাছ কেটে ফেলা মানে আমাকেই হত্যা করা হয়েছে। রায় পেয়েছে শুনে আমি বিবাদিদের অনুরোধ করেছিলাম, জমি যদি পেয়ে থাকে আপানারাই গাছ ভোগ দখল করেন, আমার কোন দাবি নেই। তারপরও কতটা নির্মমভাবে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। আমরা আদালতে আপিল করেছি। আগামীকাল (রবিবার) শুনানির দিন ধার্য্য করেছে আদালত। শুনানীর পর আমরা ফৌজদারি আইনের আশ্রয় নেব।
এবিষয়ে মামলার বাদি জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আদালতের রায় পেয়েছি আমরা। আদালত লাল নিশান পুঁতে জমি বুঝিয়ে দিয়েছে। গাছ কেটে ফেলার বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
এ ব্যপারে বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, যেহেতু বিষয়টি আদালতের আদেশ এখানে আমাদের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। তবে যদি ফৌজদারি কোনো অপরাধ সংঘঠিত হয়ে থাকে তবে কোনো পক্ষ চাইলে আইনি প্রতিকারের জন্য থানায় আসতে পারেন। তদন্ত করে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেব।
এএজেড