রাজশাহীতে হাড় কাঁপানো শীত, বিপর্যস্ত জনজীবন

ঝির ঝির বৃষ্টির মতো ঘন কুয়াশা ও দমকা হিমেল হাওয়ার দাপটে কনকনে হাড় কাঁপানো শীত পড়ছে রাজশাহীতে। মৌসুমের প্রথম দফার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ কাটলেও রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় একই থাকছে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় তেমন একটা ব্যবধান না থাকায় দিনেও কনকনে শীত অনুভব হচ্ছে। এতে রাজশাহীর স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) ভোরে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩. ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তামপাত্রা ১৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি।
এদিন সরজমিনে দেখা যায়, বেলা প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজশাহীতে ঘন কুয়াশার দাপট ছিল। আর সারারাত ও দিনজুড়ে দমকা বাতাসের দাপট চলমান রয়েছে। বাতাসের কারণেই শীতের অনুভূতি হাঁড় পর্যন্ত গিয়ে ঠেকছে। এতে ঘরের বাইরে হাঁড় কাপানো শীতের প্রকোপে জনজীবনে এক ধরনের স্থবিরতা লক্ষ্য করা গেছে। আজ ঘরের বাইরে মানুষের চলাচল তুলনামূলক অনেক কম ছিল। একান্তই প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হয়নি। এ ছাড়া যারা বাইরে বের হয়েছেন তারা মোটা গরম কাপড় শরীরে মুড়িয়ে নিয়েছেন।
সন্ধ্যার পর থেকে দিনের একটি অংশে ঘন কুয়াশার দাপট থাকায় যান চলাচলে স্থবিরতা দেখা গেছে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলোও গতি কমিয়ে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে। এ ছাড়াও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে।
নগরীতে ভোরে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন সুরুজ আলী। তিনি বলেন, গত দুই দিন থেকে শীত বেশি। রাতে অতিরিক্ত শীতের কারণে তিনি ৬-৭ টার মধ্যে বাসায় চলে যান। দিনের বেলাতেই মূলত তিনি গাড়ি চালান। কিন্তু আজকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা না মেলায় তেমন ভাড়া হয়নি। মাথায় কিস্তির বোঝা আছে। তাই এক-দুইজন যাত্রী নিয়েই কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যে ভাড়া মেরেছি।
আবহাওয়া সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে দিনের বেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কারো গায়ে লাগছে না। হিমেল হাওয়ার দাপটেই কাঁপছে উত্তর জনপদের মানুষ। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আবারও শৈত্যপ্রবাহের ইঙ্গিত দিচ্ছেন তারা।
এর আগে সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ ব্যাপারে রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যৈষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, ডিসেম্বরে প্রথম দফার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ কেটেছে। জানুয়ারির প্রথম দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেটা তুলনামূলক বেশি। আর দ্বিতীয় দিনে তাপমাত্রা নেমে ১১ দশমিকের ঘরে। আজকে ১৩ এর ঘরে থাকলেও শীতের অনুভূতি বাতাস ও ঘন কুয়াশার কারণে বেশি। সামনে তাপমাত্রা আরও নিচে নামবে।
এসআইএইচ
