চলতি বছরেই কক্সবাজারে শুরু কাঙ্ক্ষিত রেল
চলতি বছরের জুনে সমুদ্র নগরী কক্সবাজার শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চালুর আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। অপর ১০ শতাংশের কাজও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সোমবার (২ জানুয়ারি) এসব তথ্য জানিয়েছেন প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. আহমেদ সূফী।
এ বিষয়ে দোহাজারি-কক্সবাজার রেল প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মুফিজুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পের কাজ দুটি লটে হচ্ছে। প্রথম লটের সব কাজই শেষ। বাকি কাজগুলো আশা করছি জুন মাসে শেষ করতে পারব। দোহাজারি-কক্সবাজার রেলওয়ের প্রজেক্ট ম্যানেজার (ইএমডি) আকরামুজ্জামান বলেন, দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইনের দুটি অংশের মধ্যে কক্সবাজার অংশে হচ্ছে ৫১ কিলোমিটার রেলপথ। এরই মধ্যে রেলপথ নির্মাণের সব ধরনের কাজ শেষ বলা যায়।
দোহাজারি-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রজেক্টের সিনিয়র ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ারিং রাসেল মিয়া বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার সময়সীমা ২০২৪ সাল। তবে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে এ কাজ শেষ হবে। চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। পরে ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা করা হয়।
দোহাজারি-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রজেক্টের সিনিয়র ম্যানেজার মো. আনোয়ার হোসাইন বলেন, রেললাইনের বনাঞ্চলের ভেতরে হাতি চলাচলের জন্য দুটি আন্ডারপাসের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের সবগুলোর সেতুর স্প্যান ও পিলারের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে একটি আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন ভবন নির্মিত হচ্ছে।
রেলওয়ের প্রকল্প সংক্রান্ত নথি অনুসারে, ২০১০ সালে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও রামু থেকে মিয়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। মূল উদ্দেশ্য পর্যটন নগরী কক্সবাজারে যাতায়াত সহজ করা। পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা। তবে কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটারের কাজ আপাতত হচ্ছে না।
২০১৮ সালের জুলাইয়ে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এবং চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড আলাদা দুই ভাগে কাজটি করছে। এটি সরকারের অগ্রাধিকার (ফাস্ট ট্র্যাক) প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত।
কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশনসহ সব মিলিয়ে নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে রেলপথটিতে। কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের দিকে পরের স্টেশনটি রামু স্টেশন। এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে ইসলামাবাদ, ডুলাহাজারা, চকরিয়া, হারবাং, লোহাগাড়া, সাতকানিয়া ও দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি নির্মাণাধীন আইকনিক স্টেশন ও রেললাইন ঘুরে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, জুনে কক্সবাজারে আসবে স্বপ্নের রেল। যেখানে আধুনিক কোচগুলো যুক্ত হবে এই রেলপথে। আমাদের বর্তমানে যে কোচগুলো আছে সেগুলোর জানালা ছোট। এখানে বড় জানালার আধুনিক সুবিধা সমৃদ্ধ কোচ যুক্ত করা হবে, যাতে রেলে বসে যাত্রীরা পুরো প্রকৃতি উপভোগ করতে পারেন।
এএজেড