রংপুরে বিজিবির গাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগে মামলা
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় কাউন্সিল প্রার্থীর সমর্থকরা বিজিবির একটি টহল গাড়ি পুড়িয়ে দেয়ারে অভিযোগে আড়াই শতাধিক ব্যক্তির নামে মামলা দিয়েছে বিজিবি। মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বর্তমান কাউন্সিলর ও নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী পরশুরাম মেট্রোপলিটন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারাধন রায় হারাকে। গতকাল রাতে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যকে ৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টায় কেন্দ্রে ফলাফল প্রদানের সময় হারাধন রায় হারা এবং অন্য আরেক প্রার্থী একরামুল হকের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। উত্তেজিত সমর্থকরা বিজিবির একটি গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশ এসে আগুন নেভায় তবে গাড়িটি সম্পুর্ন ভস্মিভুত হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন,নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমাশু কুকরুল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল প্রদানের সময় হারাধন রায় হারা ও একরামুল হকের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ সময় কেন্দ্রের সামনের সড়ক দিয়ে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটসহ বিজিবির দুটি টহল গাড়ি যাচ্ছিল।
উত্তেজিত জনতা হঠাৎ করে গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের গাড়িটি সামনে দিকে সজোরে চলে যায়। পেছনে থাকা একটি টহল গাড়িও ব্যাক করে ফুল আমতলার দিকে চলে যায়। মাঝে থাকা বিজিবির আরেকটি গাড়ি ব্যাক করতে গিয়ে একটি সাইকেলে ধাক্কা লেগে আর ব্যাক করতে পারেনি।
এ সময় উত্তেজিত জনতা ওই গাড়িতে প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। প্রাণভয়ে সেখানে থাকা ছয় বিজিবি সদস্যের মধ্যে পাঁচজন নেমে পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। উত্তেজিত জনতা ওই দোকানে হামলা চালালে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় আবারো গাড়িতে হামলা চালালে সেখানে থাকা ড্রাইভার ও অন্য বিজিবি সদস্যকে একজন বয়স্ক লোক গাড়ি থেকে কৌশলে নামিয়ে দেন। এরপরপরই উত্তেজিত জনতা গাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ এসে আগুন নেভায়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এই ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির তিন শতাধিক ফোর্স সেখানে উপস্থিত হয়। আমরা পুরো এলাকা তল্লাশি চালিয়েছি। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত গাড়িতে থাকা পাঁচজন বিজিবি সদস্য ও ড্রাইভারের খোঁজ মিললেও একজন সদস্যের খোঁজ মিলছিল না। রাত ১টার দিকে তাকে একটি বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় একজন বিজিবি সদস্য সরকারি কাজে বাধা দেয়া এবং সরকারি সম্পদে আগুন দেয়ার অভিযোগে আজ বুধবার অজ্ঞাত আরো ২৫০ জনের নামে মামলা করা হয়। মামলায় কাউন্সিলর প্রার্থী ও হারাধন রায় হারাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। ঘটনাটি এতটাই অনাকাক্সিক্ষত যে আমরা হতবাক হয়েছি। জড়িতদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ আবদুল বাতেন জানিয়েছেন, যেকোনো ধরনের সহিংসতায় আমরা জিরো টলারেন্সে মোকাবেলা করবো। অপরাধী যে দল কিংবা যত রাঘোববোয়াল হোক না কেন কেউ ছাড় পাবে না। দুটি ঘটনাতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে। এছাড়াও পুরো নগরীজুড়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
এএজেড