অস্ত্র ঠেকিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর হুমকি!

সাভারের আশুলিয়ায় ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্ত্র ঠেকিয়ে ঘোড়া মার্কার প্রার্থী বকুল ভূঁইয়াকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আনারস মার্কার সমর্থক রুবেল আহমেদ ভূঁইয়া এবং মারুফ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর জন্যই তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী বকুল ভূঁইয়া।
এ ঘটনায় সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আশুলিয়া থানায় একটি জিডি করেছেন। এর আগে একই দিনে রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ভুক্তভোগী।
অভিযুক্ত মারুফ ভূঁইয়া আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার মোর্শেদ ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি আনারস মার্কার প্রার্থী সুমন আহম্মেদ ভূঁইয়ার চাচাতো ভাই। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আরেকজন রুবেল আহম্মেদ ভূঁইয়া সুমনের বোন জামাই।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আফছার সরদার বলেন, ‘আজকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী প্রচারণা করেছি। এ সময় আমাদের প্রার্থীর চোখে একটু সমস্যা হওয়ায় আমরা উনাকে নিয়ে হাসপাতালে আসব। এখানে
(ঘটনাস্থলে) আসার সাথে সাথেই তারা আমাদের গাড়িটি ব্যারিকেড দেন।‘
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, ‘এখানে আসার পরে আমাদের গাড়ির সামনে ব্যারিকেড দিয়ে তার (মারুফ ভূঁইয়া) গাড়ি দাড়া করায়। পরে সে গাড়ির দরজা খুলে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে গাড়ি থেকে বের হতে বলে। তার হাতে পিস্তল ছিল। পরে সে ভাইয়ের সামনে আসলে আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেই। আমি যদি না সড়াতাম তাহলে তো ভাইকে মেরেই ফেলত।’
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর ছেলে রনি ভূইয়া বলেন, সারাদিন নির্বাচনী প্রচারণা করে আমার বাবা চোখের সমস্যার জন্য ডাক্তার দেখাতে পল্লী বিদ্যুৎ চক্ষু হাসপাতালে আসে। পল্লী বিদ্যুৎ আসার পরে সুমন ভূঁইয়ার বোন জামাই রুবেল আহমেদ ভূঁইয়া এবং চাচাতো ভাই মারুফ ভূঁইয়া সাদা কালারের একটি গাড়িতে এসে আমার বাবার গাড়ি ব্যারিকেড দেয়। তারপরে তারা গাড়ি থেকে নেমে এসে আমার বাবার বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের গালিগালাজ ও হুমকি দেয়। আমার বাবা যদি নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ায় তাহলে ২৯ তারিখের আলো দেখতে পারবে না। পরে লোকজন জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে মো. বকুল ভূইয়া বলেন, সারাদিন নির্বাচনী প্রচারণার পরে চোখের ডাক্তার দেখাতে পল্লী বিদ্যুৎ চক্ষু হাসপাতালে আসি। হাসপাতালে আসার পরে আমার গাড়ি চাপিয়ে দিয়ে আমাকে অ্যাটাক করে। গাড়ি থেকে নেমে ব্যাকডালা থেকে একটা কালো অস্ত্র বের করে আমার বুকে ঠেকিয়ে দিয়েছে মারুফ ভূঁইয়া। তার সাথে ছিল রুবেল। এ সময় তারা আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের গালিগালাজ ও হুমকি দেয়।
এদিকে অভিযুক্ত রুবেল আহমেদ ভূইয়া বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটে নাই। যে ঘটনাস্থলের কথা বলছে, সেখানে আমি জয় ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। ওনার অফিস থেকে আমি যখন বের হয়েছি তখন মারুফ ভুইয়া ও তার সর্ম্পকের চাচাতো ভাই তর্কাতর্কি করছে। আমি তখন গিয়ে দুইজনকে দুই গাড়িতে উঠাই দিছি। মারুফকে মারুফের গাড়িতে বকুলকে বকুলের গাড়িতে উঠায় দিছি।
এ প্রসঙ্গে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে গতকাল রাতে আশুলিয়ার মোল্লা বাজার এলাকায় ঘোড়া মার্কার দুই কর্মীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগও ওঠেছে এই মারুফ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে মারুফ ভূইয়ার হঠাৎ এমন মারমুখী আচরণে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এসআইএইচ
