তিন ভবিষ্যৎ স্থপতির হাতে কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড
'কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড ফর ফিউচার আর্কিটেক্টস: বেস্ট আন্ডার গ্র্যাজুয়েট থিসিস' শিরোনামে তিন মেধাবী ও তরুণ ভবিষ্যত স্থপতিকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (আইএবি) সেন্টারে কেএসআরএমের পক্ষে বিজয়ীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়। পাঁচ বিশিষ্ট স্থপতি নিয়ে গঠিত বিচারক প্যানেল আধুনিক স্থাপত্য শৈলীর দূরদর্শিতা ও মেধার ভিত্তিতে এ তিনজনকে মনোনীত করেন। চতুর্থবারের মতো এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে কেএসআরএম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মানজুরুর রহমান। তিনি বিজয়ীদের হাতে অ্যাওয়ার্ড ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। স্থপতি মীর মানজুরুর রহমান বলেন, কেএসআরএম এবং আইএবি’র এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই এওয়ার্ড বিজয়ীদের আরও বেশি অনুপ্রাণিত করবে। অনান্য দেশের বড় বড় কোম্পানি ছাত্রদের টার্গেট করে। আমাদের দেশেও অনান্য গ্রুপ অব কোম্পানি এমন উদ্যোগে এগিয়ে আসবে, এটাই আমার প্রত্যাশা। কেএসআরএম মার্কেট রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট উইংসের মহাব্যবস্থাপক কর্নেল (অব.) মো. আশফাকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, তারুণ্যের উচ্ছ্বল মনন আমাদের ভবিষ্যৎ নাগরিক নির্মাণের মূলশক্তি, ঠিক যেমন কেএসআরএম স্টিল। আগামীদিনের এই সুন্দর মননগুলোকে চিনতে পারলে বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের স্বপ্ন আর আকাঙ্খা নির্মাণে তা সহায়ক শক্তি হিসেবেই কাজ করবে। বাংলাদেশ এই মুহূর্তে যে সকল মেগাস্ট্রাকচারগুলো উদ্বোধন করা হচ্ছে কিংবা যেগুলো নির্মাণাধীন রয়েছে সেগুলোর প্রেক্ষিতেও এই একই ভাবনা কাজ করে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ও জিডিপিতে অবদান রাখার মত প্রতিটি মেগা প্রকল্পের অংশীদার হতে পারায় আমরা গর্বিত। আমি নিশ্চিত তরুণ প্রজন্মের মনে লালিত হচ্ছে যে আগামী, তা প্রত্যেকের জন্য আরও এক মিলিয়ন সুযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা রাখে।
বক্তব্য দেন আইএবির সাধারণ সম্পাদক স্থপতি ফারহানা শারমীন ইমু। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্থপতি রাশেদ চৌধুরী, সূচনা বক্তব্য দেন আইএবি সভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ও আইএবি সম্পাদক (শিক্ষা) আরেফিন ইব্রাহিম।
এবার প্রথম অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তাওরিম রাহুল সিংহ, দ্বিতীয় চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) মাহির অরিত্র ও তৃতীয় হয়েছেন ইউনির্ভাসিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) মো. নাফিউ। বিজয়ীদের হাতে যথাক্রমে ১ লাখ, ৭৫ হাজার ও ৫০ হাজার টাকার চেক এবং সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। কেএসআরএম ও আইএবি যৌথ উদ্যোগে সেরা গবেষণাপত্রের ভিত্তিতে প্রকল্প প্রদর্শনের মাধ্যমে ভবিষ্যত স্থপতিদের এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (ব্রান্ড) শাহেদ পারভেজ, ডেপুটি ম্যানেজার মনিরুজ্জামান রিয়াদ, সিনিয়র অফিসার মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া প্রমুখ। অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজনের সমন্বয়ক ছিলেন স্থপতি সায়মুম কবীর।
প্রসঙ্গত, দেশের অন্যতম ইস্পাত প্রস্তুতকারী শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম প্রতিবছর তিন উদীয়মান, মেধাবী ও নবীন ভবিষ্যৎ স্থপতিকে অ্যাওয়ার্ড দিয়ে থাকে। এ উপলক্ষে কেএসআরএম ও আইএবির মধ্যে ১০ বছরের একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয় ২০১৯ সালে। সেই চুক্তির আওতায় আইএবি স্বীকৃত দেশের স্বনামধন্য ১১টি আর্কিটেকচার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্নাতক পর্যায়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ অ্যাওয়ার্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে থাকেন।
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সেরা তিন প্রতিযোগী চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এবার ২৮ জন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর প্রজেক্টের মধ্য থেকে সেরা তিনজনকে বাছাই করে পাঁচজন স্থপতির জুরি বোর্ড। ১৪ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে আইএবি সেন্টারে প্রজেক্টগুলোর প্রদর্শনী হয়। তিন দিনব্যাপি এ প্রদর্শনী চলে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত।
এএজেড