লাঠি হাতে সমাবেশের জন্য প্রস্তুত বিএনপি, নগরজুড়ে উদ্বেগ!
রাত পোহালেই সিলেটে বিভাগীয় গণসমাবেশ। শনিবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি আহুত সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুই দিন আগ থেকেই মাদ্রাসা মাঠমুখী হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। কিছুক্ষণ পর পরই বিভিন্ন স্থান থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল আসছে আলীয়ার মাঠে। মিছিল আর শ্লোগানে পুরো মাঠ এক উত্থাল রূপ ধারণ করেছে। তবে সমাবেশকে ঘিরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও কাজ করছে নগরজুড়ে। লাটি হাতে হাতে মিছিল নিয়ে মেলা মাঠে প্রবেশ করার দৃশ্যকে খুব ভালোভাবে দেখছেন না সিলেটের সুধীমহল। আশঙ্খাকে সামনে রেখে শৃঙ্খলা রক্ষায় সিলেটে মহানগর এলাকায় ১৯ টি চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ।
সকল প্রকার বিশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উদ্যোগে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসএমপি সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে মহানগর এলাকায় প্রবেশপথসহ ১৯টি স্থানে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। আর সমাবেশের দিন (শনিবার) সাদা পোশাকে সমাবেশস্থলসহ মহানগরে শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও চারজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চারটি মোবাইল টিম থাকবে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ জানান, সমাবেশকে ঘিরে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছি। কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হলে পুলিশ কাউকেই ছাড় দিবে না। এদিকে বিএনপির গণসমাবেশে অংশ নিতে শুক্রবার (১৮নভেম্বর) বিকাল থেকে নগরীতে লাঠি হাতে মিছিল দিতে দেখা গেছে কর্মীদের।
মিছিলে অংশ নেওয়া প্রায় প্রত্যেকের হাতে শুধু লাঠি দেখা গেছে। কারো কারো হাতে জাতীয় পতাকা ও বিএনপির দলীয় পতাকা এবং ধানের শিষের সঙ্গে বড় বড় লাঠি রয়েছে। প্রতিরোধের প্রস্তুতি হিসেবে লাঠি হাতে সমাবেশে এসেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা বিএনপির বিশাল একটি মিছিল আসে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে আসা একটা বড় মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়কে মিছিলটি দিতে থাকে। ওই মিছিলে প্রায় প্রত্যেকের হাতে বড় বড় লাঠি দেখা গেছে। কারো কারো হাতে পতাকা ও ধানের শিষের সাথে বড় বড় লাঠি রয়েছে। এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও খালেদ জিয়ার নামে শ্লোগান দিতে শোনা যায়।
একইভাবে ছাতক-দোয়ারাবাজার ৫ আসনের সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে মিছিলে দেখা যায় হাতে পতাকা ও লাঠি নিয়ে মিছিল দিচ্ছেন। সমাবেশে আসা প্রায় প্রতিটি মিছিলে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
মিছিলে হরিপুর থেকে আসা শাহাবুদ্দিন বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য কষ্ট করতে হলে করবো। প্রয়োজনে একদিন কেন তিন মাস না খেয়েও আন্দোলন করবো। তবুও এই সরকারের পতন চাই। আমরা খালেদা জিয়া অথবা তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। তিনি আরও বলেন, আমাদের কেউ বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে আমি যাতে প্রতিহত করতে পারি এজন্য লাঠি নিয়ে এসেছি।
গোয়াইনঘাট থেকে আসা যুবদলকর্মী জয়নাল আহমদ বলেন, চাউল-ডালের দাম যে হারে বাড়ছে আমরা খেয়ে দেয়ে বাঁচা দায়। তাই এই সরকারের পতন ছাড়া কোনো আপোষ হবে না। তিনি আরও বলেন, কেউ যদি আমাদের আঘাত করতে আসে তার প্রতিবাদ জানানোর অধিকার আমার আছে।
প্রসঙ্গত- বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত্বাবাবধায়ক সরকার, সংসদ বিলুপ্ত ও সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে বিভিন্ন বিভাগে বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ করছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি বিভাগে গণসমাবেশ করেছে দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেটেও আগামীকাল শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
এএজেড