'পিকআপ লুট করতেই চালককে খুন'

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী সদর উপজেলার লেমুয়ার কসকা এলাকায় ঝোঁপ থেকে লাশ উদ্ধারের তিনদিনের মাথায় হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ওই লাশের পরিচয় শনাক্ত ও জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ফেনী মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা। এসময় ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নিজাম উদ্দিন, সদর সার্কেলের ওসি শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া পিকআপের হেলপার শরীফুল ইসলাম সোমবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে ঘটনার আদ্যোপান্ত তুলে ধরে অপরাপর জড়িতদের নাম প্রকাশ করে।
তিনি আরো জানান, নওগাঁ জেলার বাসিন্দা আবদুল খালেক (৪৫) পেশায় পিকআপ চালক। একই জেলার বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম নামে এক যুবক গত কয়েকমাস যাবত তার সহকারি হিসেবে কাজ করে। গত ২৫ নভেম্বর রাজধানীর মীরপুর থেকে গার্মেন্টসের যন্ত্রপাতি নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে হাতিরঝিল থেকে দুলাভাই পরিচয় দিয়ে ফিরোজ নামে এক ব্যক্তিকে গাড়ীতে তোলেন শরীফ।
মেঘনা টোলপ্লাজার আগে বিরতীর সময় একটি দোকানে চা খাওয়া অবস্থায় আরো দুই জন পিকআপের পেছনে ত্রিপলের নিচে ঢুকে পড়ে। সেখানে একটি ড্রিংকসের মধ্যে চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে দেয়। এরপর খালেক অচেতন হয়ে পড়লে শরীফ পিকআপ চালাতে থাকে। পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে শরীফ ও গাড়ীর পেছনে থাকা দুই জন খালেককে রড় দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। এরপর লেমুয়ার কসকা এলাকায় নির্জন স্থানে ঝোপের মধ্যে লাশ গুমের উদ্দেশ্যে ফেলে যায়।
পরে তারা পিকআপটি কসকা থেকে ইউটার্ন করে ঢাকার দিকে চলে যায়। কুমিল্লা বিশ্বরোড পৌঁছলে শরীফ নেমে যায়। অপর দুইজন পিকআপটি নিয়ে ঢাকার গাবতলী গেলে সেখানকার কর্তব্যরত পুলিশ সিগন্যাল দিয়ে থামায়। এরপর তারা বাসা থেকে কাগজপত্র আনার কথা বলে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় শরীফ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় খালেকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেয়। বিষয়টি জানাজানির পর শরীফকে গ্রেফতার করা হলে ঘটনার পুরো রহস্য বেরিয়ে আসে। তার দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই এমনকি অপরাপর জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এএজেড
