হাসপাতাল চালুর দাবীতে মানববন্ধন ও স্মারপত্র পেশ

উদ্বোধনের চার বছরেও চালু হয়নি ২৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল। চিকিৎসক সহ হাসপাতালের জনবল নিয়োগ না করায় জেলার ১৫ লক্ষ মানুষের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অবিলম্বে হাসপাতালের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র বরাদ্দসহ ভবনে চিকিৎসা সেবা শুরু, চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগ, ২৫০ জন আবাসিক রুগীর খাবার বরাদ্দ এবং নির্ধারিত পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগসহ ৭ দফা দাবীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বরগুনার নাগরিক সমাজ।
সোমবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের আয়োজনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ মন্ত্রী ও মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরাবরে স্মারকপত্র পেশ করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল ভবনের উদ্ভোধন করেন। এরপর ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এই ভবনে আসবাবপত্র আসেনি। অপরদিকে ১০০ শয্যার জরাজীর্ণ পুরোনো হাসপাতালে ৫১ জন চিকিৎসকের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন চিকিৎসক। তত্ত্বাবধায়কের পদটিও শূন্য। এছাড়া অনেক বিভাগে কোন চিকিৎসকই নেই। দ্রুত এসকল সমস্যা সমাধানের দাবি জানান বক্তারা।
উল্লেখ্য, বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রের তথ্যমতে, ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালটিকে ১৯৯৭ সালে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এর প্রায় দুই যুগ পর ২০১০ সালের হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ২০১৮ সালে নতুন ভবনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
জেলা চিকিৎসা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জনবল ও চিকিৎসা সামগ্রী চেয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালি করেও কোনো সাড়া মিলছেনা। আর তাই প্রায় এক তৃতীয়াংশ জনবল সঙ্কট নিয়ে জীর্ণ ভবনে ১০০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে জেলার ১৫ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলছে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিপ্তরের বরগুনা কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০১৩ সালে বরগুনা গণপূর্ত বিভাগ ৩১ কোটি ৩১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৭ টাকা ব্যয়ে সাত তলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করে। ৩০ মাসের মধ্যে ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করে ভবন হস্তান্তরের কথা থাকলেও ৯ বছর পরে ২০২১ সালের জুন মাসে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই ভবন হস্তান্তর করেন। কিন্তু জনবল নিয়োগ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ না করায় ২৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের তথ্যমতে, ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারি সহ মোট ২৫১ টি পদে জনবল নিয়োগ দেয়ার কথা। কিন্ত উদ্বোধনের চার বছরেও এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুই হয়নি। বরং নিয়োগ কারা দেবেন এ নিয়ে মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে টানাটানি চলছে। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এএজেড
