রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সবজি বাজারে পাইকারী-খুচরা দামের অস্বাভাবিক পার্থক্য

ফেনী তরকারি আড়তে যে মূলা ১৫ টাকা কেজি, একই মূলা তরকারি আড়ত থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ফেনী বড় বাজারে এলেই তা বেড়ে হয়ে যায় ৫০ টাকা। একইভাবে শিম পাইকারিতে ৪০ টাকা বিক্রি হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ফুলকপি ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে ৮০ টাকা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দামের এ অস্বাভাবিক পার্থক্য প্রায় সব ধরনের সবজিতে।

বাজার ঘুরে করে দেখা যায়, ফেনী খাজা আহাম্মদ পৌর তরকারি আড়তের ২০ গজ সামনে ভ্যান গাড়িতে হকারদের তরকারিও বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। যার মধ্যে যেখানে পাইকারিতে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, পাইকারিতে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, সাদা শিম পাইকারিতে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

বেগুন পাইকারিতে ২৫ টাকা বিক্রি করলেও খুচরা বাজারে দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বরবটি ৬০ টাকায় বিক্রি হয় পাইকারিতে খুচরা বাজারে দাম ৮০ টাকা। একইভাবে পাতাকপি পাইকারিতে ৩৫ টাকা খুচরা বাজারে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। টমেটো, গাজর পাইকারি দোকানে ১০০ টাকা করে কেজি বিক্রি হলেও পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ১৩০ ও ১৪০ টাকায়। খুচরা বাজারে পটল ৪০ টাকা, সসিন্ধা ৫০, খিরা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা পাইকারিতে আরও অনেক দামে বিক্রি হয়। ফেনী শহরের প্রবেশদ্বারে অবস্থিত খাজা আহাম্মদ পৌর তরকারি আড়ত এ প্রতিদিন কোটি টাকার কেনাবেচা হয়।

সেখানকার ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যমতে, ফেনীর সকল উপজেলা ছাড়াও আশেপাশের চৌদ্দগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গুনিয়া, বান্দরবানের ব্যবসায়ীরা ও এ বাজার থেকে পাইকারি ক্রয় করতে আসেন। দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত হতে এ আড়তে তরকারি আসে। এ বাজার থেকেই ফেনী বড় বাজার, পৌর হকার্স মার্কেট, মুক্ত বাজার, ভ্যান গাড়ির হকারসহ আশেপাশের ব্যবসায়ীরা পাইকারিতে সবজি ক্রয় করেন। দাম নিয়ে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের সাথে কথা হলে তারা সকলেই ভিন্নমত ও কারণ উপস্থাপন করেন।

খুচরা বিক্রেতারা বলেন, সবজি পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বাজারে আনতে গাড়ি ভাড়া, লেবার খরচ, পলিথিনের ব্যাগ কেনার খরচ, জায়গা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিলসহ আরও অনেক খরচ থাকে। এসব খরচ তুলে লাভ করতে হলে বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই। তবে বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে ধারণা করা যায়, পণ্যের উপর বাড়তি ১৫ শতাংশ ব্যয় যুক্ত হয়। বিভিন্ন বাজারে বিক্রেতাদের অতিরিক্ত মুনাফার চেষ্টার ফলে ক্রেতা কিছুটা মুখ ফিরিয়েছে। ভ্যানে সবজির প্রতি ঝুঁকছে সাধারণ ক্রেতারা। এক্ষেত্রে সান্ধ্যকালীন ক্রেতাদের ভিড় সবচেয়ে বেশি ভ্যান গাড়িতে।

তরকারি আড়তে পাইকারী বিক্রেতারা বলছেন, ট্রাকে করে মাল আসে। যেদিন যে দাম অনুযায়ী আসে ওইভাবেই বিক্রি করতে হয়। আমরা কমিশন হিসেবে বিক্রি করি। তবে যে দামে পাইকারিতে বিক্রি হয় তার থেকে ৫ থেকে ৭ টাকা লাভে খুচরায় বিক্রি করার কথা কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশী দাম নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে অভিযান চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

গ্রামেগঞ্জে ভ্যান গাড়িতে তরকারি বিক্রি করেন আবুল হোসেন নামে একজন সবজি বিক্রেতা। ফেনী পৌর তরকারি আড়তে এ পাইকারিতে তরকারি কিনতে এসেছেন। যে মূলা তিনি ১৫ টাকা দিয়ে কিনেছেন ঠিক একই সময়ে আড়তের এর বাইরে অন্য ভ্যানগাড়িতে মূলা বিক্রি হচ্ছিল ৫০ টাকা। এমন চিত্র অন্য সব শাক সবজিতে। তিনি বলেন, প্রতিদিন এখান থেকে সবজি কিনে গ্রামে বিক্রি করি, এরমধ্যে অনেক পঁচা থাকে। ফেলে দিতে হয়। যার জন্য কেনার চাইতে বেশী দাম নিতে হয়।

আবুল কালাম নামে ফেনী বড় বাজারের একজন খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, ৩০ টাকা দিয়ে কিনলে প্রতি কেজিতে ৩ টাকা খরচ করতে হয়। বিক্রির সময় অনেক ক্রেতা খুচরা টাকা কম দেয়, বস্তা কিনলে তারমধ্যে ৫ থেকে ৭ কেজি নষ্ট থাকে। গাড়ি ভাড়া, লেবার খরচ সব মিলিয়ে হিসাব করেই দাম নির্ধারণ করতে হয়। যার জন্য দাম পাইকার বাজার থেকে বেশী রাখতে হয়।

সহিদ নামে আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, মাল নিতে গেলে বস্তা খুলে নেয়া যায় না, খারাপ হলে টাকা শেষ। নষ্টগুলো ক্রেতাদের দেয়া যায় না। ফেলে দিতে হয় কিন্তু টাকা দিয়েই কিনে আনি আমরা। এরমধ্যে লেবার খরচ যায় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। সবমিলিয়ে আমাদের খরচ যা পড়ে তা উঠাতে বেশী দামে বিক্রি করতে হয়।

জানে আলম নামে একজন ভ্যানগাড়িতে সবজি বিক্রেতা বলেন, সকালে ফুলকপি নিয়েছি ১ বস্তা। তার মধ্যে ৭ কেজি পঁচা বাদ দিতে হয়েছে। কিন্তু এগুলো টাকা দিয়েই কিনেছি। এভাবে প্রতিদিন বাদ দিতে হয়। তারমধ্য ক্রেতারা খুচরা টাকা দেয় না। নিজের পরিশ্রম আছে সবমিলিয়ে দাম নির্ধারণ করতে হয়।

মেসার্স ইলিয়াস ভূঞা স্টোরের ম্যানেজার আদিত্য কর্মকার জানান, খুচরা দোকানে এসব সবজি ৫ থেকে ৭ টাকা লাভে বিক্রির কথা কিন্তু আরও বেশী লাভ করছে। কেউ বিষয়টা দেখছেনা। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যদি অভিযান পরিচালনা করে তবেই এ সমস্যা দূর হবে।

পাইকারি বাজারের দর সম্পর্কে তিনি বলেন, পার্টিরা আড়তে তরকারি নিয়ে আসে কৃষকদের থেকে আরও কমেই কেনা হয়। এর মধ্যে লেবার খরচ গাড়ি ভাড়া সবমিলিয়ে দাম নির্ধারণ হয়। পার্টিরা আমাদের যে মাল নিয়ে যায় তা থেকে লেবার খরচ, গাড়িভাড়া বাদ দিয়ে আমাদের কমিশন রাখি। যত টাকা আয় হবে সে টাকা অনুপাতে কমিশন। লাভ হলেও তাদের, লস হলেও তাদের।

অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ফেনী বড় বাজারে একজন ক্রেতা আরিফ আজম বলেন, বিক্রেতারা যেমন ইচ্ছা দাম আদায় করছেন। আমরা তো বাধ্য হয়ে কিনছি। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণ করার নানা কর্তৃপক্ষ থাকলেও এসব দেখার কেউ নেই। তরকারি আড়তে বাইরের জেলার তরকারি বিক্রির পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত তরকারি ও বিক্রি হয়।

আবদুল খালেক নামের এক প্রান্তিক কৃষক বলেন, এসব সবজি তাদের কাছ থেকে কম দামে কিনে নিয়ে খুচরা বাজারে অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে পাইকারেরা লাভবান হলেও লোকসান হচ্ছে ফসল উৎপাদনকারী কৃষকের। তিনি বলেন, কাচা তরিতরকারির উৎপাদন খরচ বিবেচনায় উপযুক্ত মূল্য কৃষকের হাতে এলে এ পেশায় অনেকেই নতুন করে যুক্ত হবেন। তা না হলে কৃষক কমবে, অপর দিকে পণ্যের দামও বাড়বে।

বাজারে সবজি ক্রয় করতে আসা ক্রেতাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, বাজার সঠিকভাবে তদারকি করা হয় না, যার জন্য খুচরা ও পাইকারিতে অনেক পার্থক্য। এর ফলে সাধারণ মানুষকেই ভুক্তভোগী হতে হয়। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সবকিছুতেই। এখন বাজার মনিটরিং না করলে সাধারণ মানুষকে না খেয়ে থাকতে হবে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ফেনীর সহকারী পরিচালক কাওছার মিয়া বলেন, ভোক্তা অধিকার আইন অনুযায়ী ক্রয়কৃত মূল্যর চাইতে অস্বাভাবিক দামে পণ্য বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়। বেশী দামে বিক্রি করলেও এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ক্রয়ের রশিদ দেখাতে হয়। উপযুক্ত প্রমাণ না দিতে পারলে ওই ব্যবসায়ীকে আইনের আওতায় আনা হয়। তবে শাকসবজির বাজারে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির অভিযোগ পেলে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএজেড

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি