রাস্তার সেই বৃদ্ধাকে স্যান্ডেলও কিনে দিলেন ডিসি!

নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে ১০৭ বছর বয়সী বৃদ্ধা মা তারাবানু-কে রাস্তায় ফেলে যায় ছেলে। তিন ছেলে-নাতী কেউই রাজি হয়নি ওই বৃদ্ধাকে দেখাশোনা আর খাওয়ানোর দায়িত্ব নিতে। অবশেষে ডিসির মাধ্যমে ওই বৃদ্ধা এখন রয়েছেন মেয়ে বাসন্তি ওরফে বানুর বাড়ি পাশের রায়পুরে। শনিবার দুপুর পৌনে ১২ টায় নিজ মেয়েকে নিয়ে ওই বৃদ্ধাকে দেখতে যান জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
এসময় ওই বৃদ্ধাকে কিনে দেন স্যান্ডেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। নিজ গর্ভজাত ছেলেদের নিষ্ঠুরতার বিপরীতে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের এমন মানবিকতায় মুগ্ধ জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী। নাটোর সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা জোবায়ের হাবিব, ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন ও মেম্বর নূরুল ইসলাম বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা জোবায়ের হাবিব জানান, ওই বাড়িতে গিয়ে ডিসি শামীম আহমেদ বৃদ্ধা তারাবানু,মেয়ে বানু,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন। এসময় নিজ মেয়েকে লক্ষ্য করে বলেন,তোমরা দাদা-দাদা্ীকে কাছে পাওনা। অথচ এই বৃদ্ধা,মহিলাকে আপন সন্তান আর নাতীরা রাস্তায় ফেলে দিয়েছিল। এসময় তার ছোট্ট মেয়েও অমন নিষ্ঠিরতার কথা শুনে মন খারাপ করে কষ্ট পান।
এসিল্যান্ড আরো জানান, ওই বৃদ্ধাকে বেশ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেন জেলা প্রশাসক। ওই বৃদ্ধা যাতে কোন কিছুর অভাবে কষ্ট না পায় সেজন্য পরবর্তিতে যে কোন প্রয়োজনে তাকে জানাতে ওই বৃদ্ধার মেয়ে,জনপ্রতিনিধি আর এলাকাবাসীকে আহবান জানান তিনি। ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম বাবু জানান,বৃদ্ধা তারাবানুকে ২ টি শাড়ি,কম্বল,চাদর,বেডশীট,সাবান,পাউডার,তেল,চিরুনী,স্যান্ডেল ছাড়াও এক বাক্সভর্তি বিভিন্ন ফল দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বাবু আরও জানান, ওই বৃদ্ধার বড় ছেলে মানিক রাতে ৪-৫ টি ছাগলের সাথে একই ঘরে রাখতো ওই বৃদ্ধাকে। অপর দুই ছেলে বৃদ্ধাকে ঘরে না রেখে ফেলে রাখতো বারান্দায়। ওই ব্যাপার জানার পর ১০-১৫ টি শালিস করেও সমাধান হয়নি। অবশেষে তারা ওই বৃদ্ধ মা-কে রাস্তায় ফেলে যাওয়ার পর যখন ডিসি শামীম আহমেদ তার সকল ব্যবস্থা করেছেন, তখন শুক্রবার বিকালে দুই ছেলে হানিফ আর আজাদ এসে মায়ের কাছে ক্ষমা, চেয়ে তাকে আবারও নিতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা যেতে দেননি। আপন ছেলে-নাতীদের ওই বৃদ্ধার প্রতি এমন নিষ্ঠুরতার বিপরীতে জেলা প্রশাসকের মহানুভবতা আর মানবিকতায় তারা মুগ্ধ দাবী করে এজন্য জেলা প্রশাসকের প্রতি কৃতঞ্জতা প্রকাশ করেন তিনি।
এএজেড
