বাবার লালসা থেকে বাঁচতে পুলিশের আশ্রয়ে কিশোরী!

কিশোরী মেয়েকে যৌন নিপিড়নসহ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে জন্মদাতা পিতার বিরুদ্ধে! আর এ ঘটনায় কোন প্রতিবাদ না করে ধর্ষণ পরবর্তীতে মেয়েকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল খাইয়ে বাবার অন্যায়ে সহযোগিতা করার অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে। ২০১৮ সাল থেকে একেরপর এক ধর্ষণের শিকার হয়ে বাবার লালসা থেকে বাঁচতে অবশেষে পুলিশের আশ্রয় নিয়েছে ভুক্তভোগী কিশোরী। গত বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর ওয়ারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী। বর্তমানে ওই কিশোরী পুলিশি হেফাজতে আছে। তার বয়স ১৭ বছর।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে এ বছরের ১২ জানুয়ারি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। পরিবারের সম্মতিতেই তাদের বিয়ে হয়েছে। তবে বিয়ের আগে ২০১৮ সালের জুন মাসে বাবা আব্দুর রশীদ(৪০) কর্তৃক প্রথম ধর্ষণের শিকার হন ওই কিশোরী। ধর্ষণের পর বিষয়টি তার মা ববি (৩২) কে জানালে কোন প্রতিবাদ না করে মেয়েকেই শাসন করে যেন কাউকে কিছু না বলে। এরপর থেকে একেরপর এক ধর্ষণ করতে থাকেন জন্মদাতা পিতা! তার মা প্রতিবাদ না করে মেয়েকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবন করে মেয়েকে মানিয়ে নেয়ার পরামর্শ দেন।
অভিযোগে ভুক্তভোগী কিশোরী জানান, তার বাবার স্থায়ী বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। কিন্তু তাদের ঢাকাতেও বাড়ি আছে। সেখানে বড় চাচা রেজাউল করিম (৫০) ইমপোর্ট-এক্সপোর্টের ব্যবসা করেন। তার বাবা সেটি দেখভাল করেন। আর তার মা গৃহীনি। তিনি বিয়ের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বামীর বাসায় চলে আসেন। তিনি ভেবেছিলেন তার বিয়ের পর সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বিয়ের পরও তার বাবার নোংরা লালসার শিকার হয়েছেন। এমনকি তার স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসার জন্য মারপিটও করা হয়েছে। এক পর্যায়ে তিনি শশুর বাড়ি থেকে আসতে না চাইলে তার বাবার সন্ত্রাসীরা হামলা চালান। একপর্যায়ে বাবার ধর্ষণের বিষয়টি স্বামীকে জানাতে বাধ্য হন ভুক্তভোগী কিশোরী।
তিনি আরও জানান, তার স্বামী বিষয়টি জানার পর তার বড় চাচা রেজাউল করিম (৫০) এবং ছোট চাচা মাসুদ (৩৭) কে বলেন। তারা প্রথমে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালান। এমনটি তাদের সহযোগিতা নিয়ে হামলাও চালায় কিশোরীর বাবা। জীবনের নিরাপত্তাহীনতার কথা চিন্তা করে তিনি তার স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক), রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির সঙ্গে দেখা করেন। এরপর তাদের পরামর্শে ঢাকার ওয়ারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ভুক্তভোগী ওই কিশোরী জীবনের নিরাপত্তা ও অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে ওই কিশোরীর স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একজন বাবা তার মেয়েকে এভাবে নির্যাতন চালাতে পারে! আর তার মা সহযোগিতা করেছে। এরা কতটা নিকৃষ্ট। আমি দোষীদের শাস্তি চাই। এ বিষয়ে ডিএমপি ওয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহির হোসেন জানান, এঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ওই কিশোরী পুলিশি হেফাজতে আছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এএজেড
