ভোটের অধিকার নাই, ভোট কেমন জিনিস: মির্জা আব্বাস
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি'র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেছেন- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছিলেন। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর তারা চেয়েছিল বিএনপি ধংস হয়ে যাবে। কিন্ত বিএনপি ধংস হয় নাই, আরও উজ্জিবীত হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধংস করেছে। বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন। তিনিই বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। আর গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ।
সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে জনগনের কোন মূল্যায়ন নাই, ভোটের অধিকার নাই। আজ থেকে ১৫ বছর আগে যারা ভোটার হয়েছেন তারা এখন আফসোস করে বলেন, 'আমি তো আমার ভোট দিতে পারি না, ভোট কেমন জিনিস'? তাই আন্দোলনের বিকল্প নাই।
আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে এই স্বৈরাচারী সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল পৌর শহরের পশ্চিম আকুর টাকুর পাড়া ঈদগাঁ মাঠে অনুষ্ঠিত টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, হাসিনা সরকারকে হটানোর জন্য আন্দোলনের বিকল্প নাই। আমরা অবৈধ ও অনৈতিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী সরকারকে হটাতে চাই। এই সরকার লুটেরা সরকার, এই সরকার একটা ডাকাত সরকার, এই সরকার দুর্ভিক্ষের সরকার।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকবে, চুরি, ডাকাতি, দুর্ভিক্ষ থাকবে না- এটা তো হয় না। দুর্ভিক্ষ আসতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন আগামী ২৩ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ হবে- আমরা কিন্তু বলিনি। ইন্নশাআল্লাহ এই দেশের জনগন দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করার আগেই হাসিনা সরকারের পতন ঘটবে। আপনারা দেখেছেন কয়েক দিন আগে গাইবান্ধায় নির্বাচন হয়েছে। কথিত সেই নির্বাচন কীভাবে হয়েছে তা সবাই দেখেছে।
তিনি আরও বলেন, ওই গাইবান্ধার নির্বাচনে আজকের তথাকথিত সিইসি, নিশি রাতের ভোট চোর সরকারের প্রতিনিধি। আমরা বিশ্বাস করি এই ধরণের নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। আর আমরা হতে দিব না। আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ ইলেকশন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাবো। এর বাইরে আমাদের কোন বিকল্প কথা নাই।
এদিকে সম্মেলন চলাকালীন সময়ে ভার্চুয়ালি স্কাইপির মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যোগ দেন। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি বড় দল, তাই কিছু মতপার্থক্য থাকতেই পারে, তবে ঐক্য নষ্ট করে নয়। আমাদের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকার কোন বিকল্প নেই। আজ বিএনপি নেতাকর্মীরাসহ রাজনৈতিক ভিন্ন মতের মানুষ যেভাবে নির্যাতিত, সমাজের সাধারণ মানুষও ঠিক একইভাবে অত্যাচারিত।
এই নিশি রাতের সরকারের সাথে যারা একমত নয়, তারা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত। শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়ার সৈনিক হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ আমাদের উপর যে দায়িত্ব অর্পন করেছে, যে কোন মূল্যে সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, মানুষের সম্পদ লুন্ঠককারীদের হাত থেকে যদি আমরা দেশকে রক্ষা করতে না পারি, তাহলে মানুষের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। বাংলাদের তার স্বাধীন সার্বভৌমত্ব হারিয়ে ফেলবে। আমাদের আজ বড় দায়িত্ব নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করা।
মানুষের ঐক্য, স্বাধীনতা ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। মানুষ যাকে স্বচ্ছ-নিরপেক্ষভাবে ভোট দেবে। মানুষ যাকে দায়িত্ব দিবে আমরা তাকেই মেনে নেব। দেশকে বাঁচানো ও মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তারেক রহমান। সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। টাঙ্গাইলের ৮টি সংসদীয় আসনের ২৩টি ইউনিটের ২ হাজার ৩৪৬ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত টাঙ্গাইল পৌরসভার আকুর-টাকুর পাড়া ঈদগাঁ মাঠে দলীয় নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছিল।
এএজেড