'মামলা তুইল্লা না নিলে কোপাই মাইরা লামু!'

লক্ষ্মীপুরে শিশু জাকিরকে সিগারেটের আগুনে ছ্যাকা দিয়ে নির্যাতনের ঘটনার মামলা তুলে না নিলে কুপিয়ে হত্যার বলে হুমকি দিয়েছেন মামলার দ্বিতীয় আসামী ও আওয়ামী লীগ নেতা গোরফান। আজ শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের চররমনী গ্রামে সাংবাদিকদের সামনেই এ হুমকি দেন তিনি।
এসময় শিশু জাকিরকে সিগারেটের ছ্যাকা দেয়ার কথা স্বীকার করে উত্তেজিত কণ্ঠে গোরফান বলেন, আমি ভয় দেখানোর জন্য শুধু হাতে সিগারেটের ছ্যাকা দিয়েছে। প্লাস দিয়ে মনিরসহ অন্যরা আঘাত করছে। আমি তাদের ডাক দিয়েছি। এজন্য মামলা করতে হয়। আমি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ এলাকায় আমার উপরে কথা বলার কেউ নেই।এরা চোর। জাকিরের বাপ আলমগীরকে মামলা তুইল্লা নিতে কন, নইলে আমি কোপাই মাইরা লামু।
তিনি আরো বলেন, আলমগীরের ছেলে জাকির আমার আত্মীয়ের ঘরে চুরি করে ৫লক্ষ ৪০ হাজার নগদ টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। এজন্য তাকে কয়েকজন ছেলে তাকে বাড়ি থেকে ধরে আনে। টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়েছে। তারা এখন উল্টো মামলা দিয়েছে। আলমগীর মামলা না তুললে তার বাপ তুলবে। অভিযুক্ত গোরফান একই এলাকার মৃত আব্দুস রশিদের ছেলে এবং শিশু জাকির নির্যাতনের মামলার দ্বিতীয় আসামী।তিনি একই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক।
প্রসঙ্গত, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রমণী মোহন ইউনিয়নে চুরির অপবাদে শিশু জাকির হোসেনকে চেয়ারের সাথে বেঁধে প্লাস দিয়ে চামড়া টেনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের আগুনে ছ্যাকা দিয়ে নির্য়াতন করা হয়। এঘটনায় চারদিনেও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেয়নি অভিযুক্তরা। এঘটনায় গত বুধবার (২৬ অক্টোবর) আহত শিশুর বাবা আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে আওয়ামীলীগ নেতা ফোরকানসহ ৬ জনকে আসামী করে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী (সদর) আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক তারেক আজিজ মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর মডলে থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন।
অন্য আসামীরা হলেন, সদর উপজেলার চররমনী ইউনিয়নের চর রমনী গ্রামের গোরফানের ছেলে দেলোয়ার হোসেন, বাদশা মিয়ার ছেলে মনির হোসেন, আবুল কালাম ফরাজির ছেলে মনির, কালাম ভূঁইয়ার ছেলে মাকছুদ আলম ও মৃত মজিবুল হকের ছেলে শাহ আলম। ভুক্তভোগী শিশু জাকির একই ইউনিয়নের মধ্য চররমনী মোহন গ্রামের বাসিন্দা।
এদিকে ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় আদালতে মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন মামলার বাদী আলমগীর হোসেন। প্রতিনিয়তই গোফরানসহ অন্য আসামীরা মামলা তুলে না নিলে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে জানান তিনি। আলমগীর হোসেন বলেন, মামলা করার পর থেকে আসামীরা বাড়িঘরে এসে মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করছে। অন্যথায় হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিবে বলে ভয় দেখাচ্ছে। এঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করেন তিনি।
এব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি খুবই নেক্কার জনক। বিষয়টি তদন্ত চলছে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএজেড
