আবারও তেঁতুলিয়ায় উঁকি দিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা

হিমালয় কন্যা খ্যাত দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন দিক থেকে আবারও উঁকি দিয়েছে পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। গত কয়েকদিন ধরে আকাশ মেঘমুক্ত থাকার কারণে ভারতের সিকিম ও নেপাল সীমান্তে অবস্থিত পৃথিবীর অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিলছে। চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য মেলে ধরে কাঞ্চনজঙ্ঘা যেন দুই হাত বাড়িয়ে ডাকছে প্রকৃতি প্রেমীদের। সূর্যের লাল আভা কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তিম আকাশ ধারণ করে। মনে হয় কেউ যেন নববধূর কপালে সিধূরের আচঁড় দিয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সূর্য উদয়ের পর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৪টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্গা ভালোভাবে দেখা যায়। তবে এই নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার উপযুক্ত স্থান হলো তেতুঁলিয়া ডাকবাংলো। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার মজাই যেন আলাদা। ভোর থেকে এই অপরূপ দৃশ্য চোখের সামনে স্পষ্ট ভেসে উঠেছে। গত কয়েক দিন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্ট দেখা দেওয়ায় তা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে তেঁতুলিয়ার সরকারি-বেসরকারি সব রেস্ট হাউজ ও হোটেলগুলো অগ্রিম বুকিং শুরু হয়।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছরই কাঞ্চনজঙ্ঘার মোহনীয় সৌন্দর্য উপভোগ করেন স্থানীয়রা। এবারও তারাই প্রথম দর্শন করেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। শীতকাল ও কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য উপভোগ করতে নভেম্বর-ডিসেম্বরে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা ভিড় করেন তেঁতুলিয়ায়।
আশরাফুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, মেঘ মুক্ত আকাশে ভোর থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্য দেখা যায়। জেলার সব স্থান থেকেই এ দৃশ্য খালি চোখে দেখা যায়। তবে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো সংলগ্ন সীমান্ত নদী মহানন্দার তীর এবং শালবাহান ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো থেকে সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। মঙ্গলবার ভোর থেকেই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান জানান, ভোরের আকাশে কালচে, এরপর শুভ্র বরফের সর্বশেষ সোনালী বর্ণের কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য সব আমাদের আনন্দ দেয়। পাশাপাশি সূর্যাস্তের সময় নানা বর্ণের কাঞ্চনজঙ্ঘা সকলকে মুগ্ধ করে। এক কথায় নিজের চোখে না দেখলে এর সৌন্দর্য বর্ণনা করার মতো নয়।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় টুরিষ্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) তোফাজ্জল হোসেন বলেন, পঞ্চগড়ে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে টুরিষ্ট পুলিশ পঞ্চগড় জোন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসছেন। আমরা তাদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে সদা তৎপর।
তেতুঁলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ জানান, প্রতি বছরই অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে নভেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মেলে। আকাশে মেঘ না থাকলে ভালোভাবে দেখা যায়। তবে মেঘ থাকলে আর দেখা মেলে না। তবে গত কয়েকদিন ধরে আকাশ মেঘমুক্ত থাকায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিস্কার ভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে।
এসআইএইচ
