মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা
পরিবহনের ডাক দিয়েছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি। ফলে দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষজনের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে বাশের লাঠির মাখায় পতাকা লাগিয়ে মিছিল নিয়ে হেঁটে সমাবেশ স্থলে আসছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এতে অনেকেই ভোগান্তিতে পড়বেন বলে জানান সাধারণ মানুষেরা। তবে এবারের গণ-সমাবেশে দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। তারা ‘চলো চলো রংপুর চলো’-এ শ্লোগান দিয়ে পায়ে হেটে সমাবেশ স্থলে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘটের কারণে রংপুরের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ধর্মঘট চললেও বিভাগের আট জেলা বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাটের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ট্রাক-বাস ভাড়া করে এবং ট্রেনে রংপুরে এসে পৌঁছেছেন বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীরা। বিভিন্ন জেলা থেকে দলে দলে সমাবেশ স্থলে জড়ো হচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
রংপুরের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে দুপুর ২টায় শুরু হবে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ। তার আগেই বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাত থেকে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে দলে দলে সমাবেশ স্থলে জড়ো হচ্ছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রংপুর মোটর মালিক সমিতির ডাকা ‘দাবি আদায়ের’ পরিবহন ধর্মঘট চলছে। এর ফলে বিভাগের আট জেলায় ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল বন্ধ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা রংপুরে আসছেন। সেখানে আসা নেতা-কর্মীদের জন্য নগরীর ২০টি স্কুল মাঠে অস্থায়ী প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। এসব প্যান্ডেলে অবস্থান করছেন দলটির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী।
শনিবার ভোর থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে পায়ে হেঁটে সমাবেশ স্থলে আসছেন। দুপুর ১২টার মধ্যে সভাস্থল পরিপূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
সরেজমিনে সকালে দেখা যায়, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আজ সকাল থেকে হেঁটে দলে দলে সমাবেশ স্থলে জড়ো হচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। দিনাজপুর জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিলে শ্লোগান দিতে দিতে সমাবেশ স্থলে এসেছেন।
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের শ্রীরামপুর ইউনিয়নের আজিজপুর গ্রাম থেকে সমাবেশ স্থলে এসেছেন মোস্তাফিজুর রহমান (৪৬) ও রহিদুল ইসলাম (৪০)। তাদের মতো গাইবান্ধার সাঘাটার ঘুড়িদহ থেকে এসেছেন আরিফুল ইসলাম, কড়িগ্রমের রাজারহাটের সাদ্দাম হোসেন ও গোবিন্দগঞ্জ মহিমাগঞ্জের জাহিদুল ইসলামসহ অনেকেই। তাদের আতঙ্ক, যদি গাড়ি ঘোড়া বন্ধ থাকে, পথে বাধা দেয়া হয়, মারামারি হয় তাহলে তো সমাবেশে আসতে পারবো না, এজন্য আগেই আসা।
এ ব্যাপারে রংপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা বেলা ১২টার মধ্যে সমাবেশ স্থলে চলে আসবেন। বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশ স্থলে আসার জন্য রওনা দেওয়া নেতা-কর্মীদের নগরীর মর্ডান মোড়, সিও বাজার, বাস টার্মিনাল ও মেডিক্যাল মোড়ে পুলিশ বাঁধা প্রদান করছে। মিছিল করে সমাবেশে আসা যাবে না জানিয়ে নেতা-কর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে চলছে পরিবহন মালিক সমিতির ডাকা বাস ধর্মঘট। দ্বিতীয় দিনের মতো আজ ঢাকাগামী বাসসহ আন্তঃজেলায় কোনও বাস চলছে না। বন্ধ রয়েছে ট্রাক, মিনিবাস, মাইক্রোবাস।
রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি একেএম মোজাম্মেল হক বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তার জন্য পরিবহন মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আইন করেছে। কিন্তু রংপুরের মহাসড়ক গুলোতে এখনো মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। এজন্য প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এমন অবস্থায় মহাসড়কে এসব যান চলাচল বন্ধের জন্য আমরা কয়েকটি সংগঠন মিলে সভা করে শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুরের সকল রুটে পরিবহন ধর্মঘটের আহ্বান করা হয়েছে।