রংপুরে সমাবেশ: জ্যামার দিয়ে নেটওয়ার্ক বন্ধের অভিযোগ

রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দারা জ্যামার স্থাপন করে সমাবেশস্থলে মোবাইলের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিএনপি নেতা-কর্মীদের।
সমাবেশ শুরুর একদিন আগে আকস্মিকভাবে রংপুর জেলা মটর মালিক সমিতি শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘটের আহ্বান জানায়। ফলে আগেই সমাবেশস্থলের পাশাপাশি নগরীর ২০টি স্কুল মাঠে অস্থায়ী প্যান্ডেল তৈরি করে সেখানে অবস্থান নিতে দেখা গেছে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে।
বৃহস্পতিবার রাতেই রংপুর বিভাগের ৮ জেলা বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ট্রাক বাস ভাড়া করে এবং ট্রেনে করে রংপুরে পৌঁছান কয়েক হাজার নেতা-কর্মী। তারা নগরীর বিভিন্ন অস্থায়ী ক্যাম্পে অবস্থান নেন। শুক্রবার সকাল থেকে তারা সেখানে আছেন। শনিবার সকালে তারা সমাবেশস্থলে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
মহাসমাবেশস্থল রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েক হাজার নেতা-কর্মী খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন, স্লোগান দিচ্ছেন। সেখানে অবস্থান করছেন মহাসমাবেশের সমন্বয়কারী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এবং সংসদ সদস্য হারুনর রশীদ, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. জাহিদ হোসেন, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেকসহ স্থানীয় নেতারা। তারা বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আগত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।
এ ব্যাপারে বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক জানান, তিনি নিজেও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে রাতে সমাবেশস্থলে অবস্থান করবেন।
এদিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে আসা বিএনপি নেতা মোবাচ্ছের হোসেন জানান, তারা শুক্রবার থেকে পরিবহন ধর্মঘটের খবর জানার পর বৃহস্পতিবার রাতেই তিনটি ট্রাকে করে দু'শতাধিক নেতা-কর্মী শুক্রবার ভোরে সভাস্থলে এসে পৌঁছান। সমাবেশ সফল করে তারপরই বাসায় ফিরবেন বলে জানান তিনি। একই কথা বললেন ঠাকুরগাঁও থেকে আসা মনসুর আলী, সাজ্জাদসহ কয়েকজন।
অন্যদিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ি থেকে এসেছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য মকবুল হোসেন ও আব্দুল মান্নান। তারা ২০ জন মালবাহী ট্রাকে করে রাতে রওনা দিয়ে সরাসরি সভাস্থলেই এসেছেন। রাতে সভাস্থলেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
নগরীর জুম্মাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ, রবাটসনগজ্ঞ স্কুল মাঠ, সিও বাজার, খটখটিয়া, আলমনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় নেতা-কর্মীদের জন্য অস্থায়ী প্যান্ডেল তৈরি করেছে মহানগর বিএনপি। সেখানে স্বেচ্ছাসেবকরা দেখভাল করছেন।
রবাটসনগজ্ঞ স্কুল মাঠে দায়িত্বে থাকা যুবদল নেতা মাসুম জানান, নেতা-কর্মীদের জন্য ধানের খড় বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপরে সামিয়ানার কাপড় দেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীরা রাতে নিজ নিজ অস্থায়ী প্যান্ডেলে অবস্থান করবেন। সেখানে দিনাজপুর ও লালমনিরহাট জেলার নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছেন।
এদিকে বিএনপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সভাস্থলে বিকালের পর থেকে মোবাইল নেটওর্য়াক নেই। সম্ভবত নেটওর্য়াক জ্যামার দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ অনেক চেষ্টা করেও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান শামু বলেন, সমাবেশস্থলে হঠাৎ করে সন্ধ্যার পর থেকে মোবাইল নেটওর্য়াক হাওয়া হয়ে গেছে। ফলে এখান থেকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য সরকারকে দায়ী করে এটা পরিকল্পিত বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এসজি
